পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৬
শি বা জী

কোনই দোষ নাই। রাজা কুঠুরীর মধ্যেই ছিলেন। আমরা ঠিকমত গিয়া দেখিতেছিলাম; তথাপি একেলা অদৃশ্য হইয়া গিয়াছেন। তিনি মাটির মধ্যে ঢুকিলেন, অথবা আকাশে উড়িয়া গেলেন, বা হাঁটিয়া পলাইলেন তাহা জানা গেল না। আমার কাছেই ছিলাম; দেখিতে দেখিতে তিনি আরনাই। কি যাদুবিদ্যায় এমনটা হইল বলিতে পারি না।”

 কিন্তু আওরংজীব এসব বাজে কথায় ভুলিবার পাত্র নহেন। অমনি চারিদিকে “ধর ধর” শব্দ উঠিল, রাজ্যমধ্যে পথঘাটের সব চৌকি, পার-ঘাট এবং পর্ব্বতের ঘাটিতে হুকুম পাঠান হইল যেন দাক্ষিণাত্যযাত্রীদের সকলকে ধরিয়া দেখা হয় তাহাদের মধ্যে শিবাজী আছে কি না। এই হুকুম লইয়া দক্ষিণ দিকে কত সওয়ার ছুটিল। আর আগ্রা বা তাহার নিকটে শিবাজীর যত অনুচর ছিল (যেমন ত্র্যম্বক সোনদেব দবীর এবং রঘুনাথ বল্লাল কোর্‌ডে), তাহাদের ধরিয়া কয়েদ করা হইল। মারের চোটে তাহারা বলিল যে, রামসিংহের সাহায্যে শিবাজী পলাইয়াছেন! বাদশাহ রাগিয়া রামসিংহের দরবারে আসা বন্ধ করিলেন এবং তাঁহার মনসর ও বেতন কাড়িয়া লইলেন।

শিরাজীর পলায়নের সময়ের নানা আশ্চর্য্য ঘটনা

 চতুর-চুড়ামণি শিবাজী দেখিলেন, আগ্রা হইতে মহারাষ্ট্রের পথ দক্ষিণ পশ্চিম মুখে গিয়াছে, সুতরাং সেদিকে সর্ব্বত্রই শত্রু সজাগ হইয়া পাহারা দিবে। কিন্তু উত্তর-পূর্ব্ব দিকের পথে কোন পথিকের উপরই সন্দেহ করিবার কারণ থাকিবে না। সেইজন্য তিনি আগ্রা হইতে বাহির হইয়া প্রথমে উত্তরে,পরে পূব্বদিকে—অর্থাৎ ক্রমেই মহারাষ্ট্র হইতে অধিক দূরে চলিতে লাগিলেন। প্রথম রাত্রিতে ঘোড়া ছুটাইয়া তাঁহারা দ্রুতগতি মপুরায় পৌঁছিলেন, কিন্তু দেখিলেন যে বালক শম্ভুজী অবসন্ন হইয়া পড়িয়াছে; পথ চলিতে একেবারে অক্ষম। অথচ আগ্রার এত নিকটে