পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০২
শি বা জী

লাগিলেন যে শিবাজীকে বন্দী বা বধ করিলে কোন লাভই হইবে না কারণ তিনি দেশে এমন সুবন্দোবস্ত করিয়া গিয়াছেন যে, তাঁহার অনুপস্থিতিতে মারাঠারা পূর্ব্বের মতই রাজ্য চালাইতে থাকিবে; আর শিবাজী যদি নিরাপদে দেশে ফিরিতে না পারেন তবে ভবিষ্যতে কেহই বাদশাহী ওমরাদের কথা বিশ্বাস করিবে না। জয়সিংহ সেইসঙ্গে পুত্র রামসিংহকে বার বার লিখিলেন,—“দেখিও, শিবাজীর রক্ষার জন্য তোমার ও আমার আশ্বাস-বাণী যেন কোনমতে মিথ্যা না হয়, আমরা যেন প্রতিজ্ঞাভঙ্গের দুর্নামে না পড়ি।”

 এদিকে শিবাজীকে লইয়া কি করিবেন তাহা আওরংজীব ভাল বুঝিতে পারিলেন না, তাঁহার কোনই একটা নীতি স্থির হইল না। প্রথমে ভাবিয়াছিলেন, জয়সিংহ বিজাপুর-রাজ্যকে সম্পূর্ণ পরাস্ত করিলে, দাক্ষিণাত্য-সম্বন্ধে নিশ্চিন্ত হইয়া শিবাজীকে ছাড়িয়া দিবেন। কিন্তু সে জয়ের আশা ক্রমেই ক্ষীণ হইয়া আসিল। তখন বাদশাহ একবার বলিলেন যে, রামসিংহ শিবাজীর দায়িত্ব লইয়া আগ্রায় থাকুক, তিনি বরং দাক্ষিণাত্যে যাইবেন। আবার বলিলেন, শিবাজীকে আফঘানিস্থানে মুঘল-সৈন্যের সহিত কাজ করিতে পাঠাইবেন; নেতাজীকে এবং পরে যশোবন্তকেও এইরূপ আফঘানিস্থানে পাঠান হইয়াছিল,—ইহা এক প্রকার দ্বীপান্তর দেওয়া। কিন্তু এ দুটির কিছুই হইল না। জয়সিংহ ও তাঁহার পুত্র একবাক্যে শিবাজীকে আগ্রায় রাখিবার ভার লইতে অস্বীকার করিলেন। অবশেষে শিবাজী একমাত্র কোতোয়াল ফুলাদ খাঁর জিম্মায় রহিলেন।

 সেই অবস্থায় শিরাজী পলাইলেন। তাঁহার পলায়নের তিন মাসকাল এবং দেশে ফিরিবার পর প্রথম কিছুদিন ধরিয়া জয়সিংহের ভয় ও দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না। তিনি চারিদিকে অন্ধকার দেখিলেন। একে