পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
শি বা জী

মহারাজা যশোবন্ত সিংহকে লিখিলেন,—“বাদশাহ আমাকে পরিত্যাগ করিয়াছেন। নচেৎ আমার ইচ্ছা ছিল, তাঁহার অনুমতি লইয়া নিজবলে কান্দাহার দুর্গ কাড়িয়া লইয়া তাঁহাকে দিই। আমি শুধু প্রাণের ভয়ে আগ্রা হইতে পলাইয়াছি। মির্জা রাজা জয়সিংহ আমার মুরুব্বি ছিলেন, তিনি আর নাই। এখন আপনার মধ্যস্থতায় যদি আমি বাদশাহর ক্ষমা লাভ করি, তবে আমি আমার পুত্রের সহিত সৈন্যদলকে দাক্ষিণাত্যের শাসনকর্তা মুয়ুজ্জমের অধীনে কাজ করিতে পাঠাইয়া দিতে পারি।”

 যুবরাজ ও যশোবন্ত এই প্রস্তাব বিশেষভাবে সমর্থন করিয়া বাদশাহকে লিখিলেন। আওরংজীব সম্মত হইয়া শিবাজীর ‘রাজা’ উপাধি মঞ্জুর করিলেন। ১৬৬৭ সালের ৪ঠা নবেম্বর শম্ভুজী আসিয়া আওরঙ্গাবাদে যুবরাজ মুয়জ্জমের সহিত সাক্ষাৎ করিলেন। পরবর্ত্তী আগষ্ট মাসে প্রতাপরাও (নূতন সেনাপতি) এবং নিয়াজীর অধীনে শিবাজীর একদল সৈন্য আসিয়া বাদশাহর কাজ করিতে লাগিল। তজ্জন্য শম্ভুজীকে পাঁচ হাজারী মনসবের উপযুক্ত জাগীর বেরার প্রদেশে দেওয়া হইল। এইরূপে “দুই বৎসর পর্য্যন্ত মারাঠা-সৈন্য মুঘল-রাজ্যের জমি হইতে পেট ভরাইল, শাহজাদাকে বন্ধু করিল।” [সভাসদ]

 ১৬৬৭, ১৬৬৮, ১৬৬৯ এই তিন বৎসর শিবাজী শান্তিতে কাটাইলেন,—বিজাপুর বা মুঘল-রাজ্যে কোন উপদ্রব করিলেন না। তাহার পর ১৬৭০ সালের প্রথমেই আবার বাদশাহর সঙ্গে যুদ্ধ বাধিল। ইহার কারণ নানা লোকে নানা রকম বলে। এক গ্রন্থে আছে, নিন্দুকেরা আওরংজীবকে জানাইল যে শাহজাদা মুয়জ্জম শিবাজীর সহিত গাঢ় বন্ধুত্ব করিয়া তাঁহার সাহায্যে স্বাধীন হইবার চেষ্টায় আছেন, এবং এই কথা শুনিয়া বাদশাহ শিবাজীর পুত্র ও সেনাপতিদের হঠাৎ বন্দী