পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৮
শি বা জী

দুর্গ শিবাজীর হাতে আসিল। মুঘল সেনাপতিদের মধ্যে একমাত্র দাউদ খাঁ কুরেশী যুদ্ধ করিয়া কিছু ফললাভ করিলেন, কিন্তু তিনি একলা কত দিক সামলাইবেন?

দাক্ষিণাত্যে মুঘলদিগের গৃহ-বিবাদ

 আওরংজীব শিবাজীর নূতন বিদ্রোহের সংবাদ পাইবামাত্র আরও অনেক সৈন্য ও সেনাপতি মহারাষ্ট্রে পাঠাইয়া দিলেন। কিন্তু তাহাতে কোন ফল হইল না। গৃহবিবাদে মুঘলদের সকল চেষ্টা পণ্ড হইয়া গেল। দাক্ষিণাত্যের সুবাদার কুমার মুয়জ্জম এবং তাঁহার প্রিয়পাত্র যশোবন্ত সিংহের সহিত দাক্ষিণাত্যে সর্ব্বশ্রেষ্ঠ মুঘল-বীর ও সেনাপতি দিলির খাঁর মর্মান্তিক শত্রুতা ছিল। তাহার উপর নিন্দুকেরা বাদশাহকে বলিল যে, কুমার নিজকে স্বাধীন করিবার চেষ্টায় আছেন। এ-পক্ষ ওপক্ষের বিরুদ্ধে বাদশাহর নিকট নালিশ করিতে লাগিল। দিলিরের ভয় হইল, সুবাদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিতে গেলে কুমার তাঁহাকে কয়েদ করিতে পারেন! অবশেষে (আগষ্ট ১৬৭০) গভীর বর্ষার মধ্যে দিলির প্রাণভয়ে মহারাষ্ট্র দেশ ছাড়িয়া উত্তর-ভারতের দিকে পলাইলেন। আর মুয়জ্জম এবং যশোবন্ত তাপ্তী নদী পর্য্যন্ত সৈন্যসহ তাঁহাকে তাড়া করিয়া গেলেন, এবং এই অবাধ্য কর্ম্মচারীকে দমন করিবার জন্য শিবাজীর সাহায্য চাহিয়া পাঠাইলেন।

 ইহার ফলে শিবাজীর জয়জয়কার হইল; কোথাও তাঁহাকে বাধা দিবার কেহ নাই। ইংরাজকুঠীর সাহেব লিখিলেন, “শিবাজী আগে চোরের মত গোপনে দ্রুত চলিতেন। কিন্তু এখন আর তাঁহার সে অবস্থা নাই। তিনি প্রবল সৈন্যদল, ত্রিশ হাজার যোদ্ধা লইয়া দেশ জয় করিতে করিতে অগ্রসর হইতেছেন। শাহজাদা যে এত কাছে রহিয়াছেন, সেদিকে ভ্রূক্ষেপও করেন না।”