পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজীর স্বাধীন রাজ্য স্থাপন
১১১

তাঁহাকে বৎসর বৎসর বারো লাখ টাকা কর না দেয়, তবে তিনি আগামী বৎসর আসিয়া শহরের বাকী ঘরগুলিও পুড়াইয়া দিয়া যাইবেন।

 যেই মারাঠারা সুরত হইতে বাহির হইল, অমনি শহরের গরিব লোকগুলি (যাহারা পলায় নাই) সব বাড়ীতে ঢুকিয়া যাহা অবশিষ্ট ছিল তাহাও লুঠ করিতে লাগিল। ইংরাজ-কুঠীর জাহাজী-গোরারাও এই কাজে যোেগ দিল।

 যখন সুরতে তিনদিন ধরিয়া এই লুঠ চলিতেছিল, তখন পাঁচ-ছয় ক্রোশ পশ্চিমে সুহায়িলী বন্দরে ইংরাজদের গুদাম এবং কুঠীতে সুরত কুঠীর সাহেবগুলি ছাড়া সুরত শহরের শাহ-বন্দর (অর্থাৎ জাহাজী মালের দারোঘা), প্রধান কাজী এবং বড় বড় হিন্দু মুসলমান ও আরমানী বণিক আশ্রয় লইয়াছিল। মারাঠারা আসিবে আসিবে বলিয়া দুই-একদিন একটা জনরব উঠিয়াছিল; সকলে তাহাতে ভীত ও চঞ্চল হইয়াছিল বটে, কিন্তু ইংরাজেরা জেটীর ধারে আটটা তোপ রাখিয়া বন্দর রক্ষার সুন্দর বন্দোবস্ত করিয়াছিল এবং কোনই বিপদ ঘটে নাই।

 এইরূপে জনকতক বিদেশী দোকানদার মারাঠাদের তুচ্ছ করিয়া নিজেদের বল দেখাইল; আর ‘দিল্লীশ্বরো বা জগদীশ্বরোবা’র শাসনকর্তা ও সৈন্যগণ ভয়ে পলাইল। এই দৃশ্য দেখিয়া দেশের শোক বিস্মিত হইল। সুরতের শ্রেষ্ঠ ধনী হাজি সাইদ বেগ্-এর পুত্র সুহারিলীতে আশ্রয় পাইয়া বলিলেন, “আমি সপরিবারে বোম্বাই চলিয়া যাইব বাদশাহী রাজ্যে আর বাস করিব না।”

 একটা কথা আছে, বাঘে যাহাকে একবার ঘাল্ করিয়া হাড়িয়া দেয়, সে লোক পরে বাঁচিলেও মরার সামিল হইয়া থাকে। শিবাজীর দুই-দুইবার লুঠের পরে সুরতেরও সেই দশা হইল। শিবাজী ঐদিকে