পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৪
শি বা জী

কোঁকনের দিকে চলিয়া গেল; তাহাদের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইয়াছে, একদিন এক রাত্রি মুঘলদের সেখানে থামাইয়া রাখিয়া তাহারা সুরত বগলানার লুঠ নিরাপদে দেশে লইয়া যাইতে পারিল।

 ডিণ্ডোরীর যুদ্ধের ফলে ইহার পর এক মাসেরও অধিক কাল মুঘল শক্তি নিস্তেজ হইয়া রহিল। দাউদ খাঁ আহত সৈন্যদের লইয়া নাসিকে এবং পরে আহমদনগরে গিয়া বিশ্রাম করিলেন। কিন্তু এই বৎসরের শেষে (১৬৭০) তাঁহাকে আবার এখানে আসিতে হইল।

প্রথমবার বেরার ও বগলানা লুঠ

 সুরত-লুঠের পর মারাঠারা দেড়মাস নিশ্চেষ্ট ছিল। কিন্তু ১৬৭০ সালের ডিসেম্বরের প্রথমে শিবাজী আবার সসৈন্য বাহির হইলেন; পথে চাণ্ডোর গিরিশ্রেণীতে অহিবন্ত ও অন্যান্য কয়েকটি উচু পাহাড়ী দুর্গ জয় করিয়া তিনি বগলানার মধ্য দিয়া দ্রুতবেগে খান্দেশ প্রদেশে ঢুকিলে এবং তাঁহার রাজধানী ব্বুর্হানপুর শহরের বাহিরের গ্রামগুলি লুঠিলেন। তাহার পর হঠাৎ পূর্ব্বদিকে ফিরিয়া উর্ব্বর ও ধনশালী বেরার প্রদেশ আক্রমণ করিলেন। এপর্য্যন্ত মারাঠারা এতদূর আসে নাই, কাজেই বেরারের কেহই এই বিপদের জন্য প্রস্তুত ছিল না। শিবাজী অবাধে মনের সুখে কারিঞ্জা নামক খুব সমৃদ্ধিশালী শহর হইতে এক কোটি টাক মূল্যের ধনরত্ন, অলঙ্কার ও মুল্যবান কাপড় লইলেন। লুঠের জিনিস চারি হাজার বলদ ও গাধার পিঠে বোঝাই করিয়া এবং শহরের সমস্ত ধনী লোককে[১] টাকা আদায়ের জন্য বন্দী করিয়া শিবাজী বেয়ারে অন্যান্য শহরে চলিলেন, এবং সেখানে অগাধ ধন লুঠিলেন। সর্ব্বত্র


  1. কিন্তু কারিঞ্জাৱ সর্বশ্রেষ্ঠ ধনী ধরা পড়েন নাই। তিনি স্ত্রীলোকের পোষাক পরিয়া নিরাপদে পলাইয়াছিলেন। তিনি জানিতেন যেখানে শিবাজী উপস্থিত সেখানে কোনো মারাঠা সৈন্য স্ত্রীলোকের উপর হাত তুলিতে সাহস পাইবে না।