পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজীর স্বাধীন রাজ্য স্থাপন
১১৯

প্রধান বণিকদের নামে উপরি উপরি তিনখানা পত্র পাঠাইয়া চারিলক্ষ টাকা কর চাহিলেন এবং বলিলেন যে, এই টাকা না দিলে তিনি সুরত দখল করিবেন। শেষ চিঠিতে শিবাজীর জবানী এইরূপ লেখা ছিলঃ—“আমি তিনবারের বার এই শেষবার তোমাদের বলিতেছি যে, সুরত প্রদেশের খাজনার এক সিকি অর্থাৎ চৌথ আমাকে পাঠাইয়া দাও। তোমাদের বাদশাহ আমাকে নিজ দেশ ও প্রজা রক্ষা করিবার জন্য প্রকাণ্ড সৈন্যদল রাখিতে বাধ্য করিয়াছেন; সুতরাং তাঁহার প্রজারাই এই সৈন্যদলের খরচ জোগাইবে। যদি এই টাকা শীঘ্র না পাঠাও, তবে আমার জন্য একটা বড় বাড়ী প্রস্তুত রাখিও, আমি গিয়া সেখানে বসিয়া থাকিব এবং সুরতের খাজনা এবং মালের মাশুল আদায় করিয়া লইব। এখন আমাকে বাধা দিতে পারে এমন লোক তোমাদের মধ্যে কেহ নাই।”

 এই পত্র পাইবার পর সুরতে পরামর্শের জন্য সভা বসিল। শহরবাসী এবং আশপাশের গ্রামের প্রধান লোকদিগের উপর তিনলক্ষ টাকা চাঁদা তোলার ভার দেওয়া হইল। কিন্তু অনেক আলোচনার পর লোকেরা কিছুই দিল না, কারণ তাহারা বেশ জানিত যে শহরের মুঘল-শাসনকর্ত্তা সব টাকা নিজে খাইয়া ফেলিবে, মারাঠাদের শান্ত করিবার জন্য কিছুই দিবে না।

 তাহার পর যতবারই মারাঠারা এদিকে আসিতেছে বলিয়া গুজব উঠিত, ততবারই সুরতবাসীরা পলাইবার পথ খুঁজিত। এই কাণ্ড অনেক বৎসর ধরিয়া চলিল।

 ১৬৭২, জুলাই মাসে পেশোয়া নাসিক মেলায় ঢুকিয়া লুঠপাঠ আরম্ভ করিলেন। সেখানকার দুইজন মুঘল থানাদার পরাস্ত হইয়া পলাইল। অক্টোবর নবেম্বর মাসে মারাঠা অশ্বারোহীরা দ্রুতবেগে বেরার ও