পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
শি বা জী

চোটে জানিয়া লইয়া মারাঠারা তাহা দখল করিল। সংবাদ পাইয়া শিবাজী নিজে শীঘ্র আসিয়া দুর্গটি দেখিলেন, এবং সেখানে একমাস থাকিয়া দেওয়াল মজবুত করিয়া, আরও কামান আনাইয়া পনহালাকে নিজের অজেয় আশ্রয়স্থলে পরিণত করিলেন। কিছুদিনের মধ্যে পারলি এবং সাতাৱা দুর্গও তাঁহার লাভ হইল।

উমরাণীর যুদ্ধ

 এতগুলি দুর্গ হাতছাড়া হওয়ায় বিজাপুরের রাজসভায় মহা আন্দোলন পড়িয়া গেল। নূতন উজীর খাওয়াস্ খাঁর অবহেলায় এই সব ক্ষতি হইয়াছে বলিয়া সকলে তাঁহাকে দোষ দিতে লাগিল। বহলোল খাঁকে পনহালা উদ্ধার করিতে পাঠান হইল, এবং আর তিনজন বড় সেনাপতিকে দূর দূর প্রদেশ হইতে নিজ সৈন্য সহিত আসিয়া বহলোলকে সাহায্য করিবার জন্য হুকুম গেল।

 কিন্তু এই সকল সাহায্য পৌঁছিবার পূর্বেই শিবাজী বহলোলকে আক্রমণ করিলেন। তাঁহার প্রধান সেনাপতি প্রতাপ রাও পনের হাজার অশ্বারোহীসহ দুই রাত্রি গোপনে দ্রুত কুচ করিয়া আসিয়া উমরাণীনামক গ্রামে (বিজাপুর শহরের ১৮ ক্রোশ পশ্চিমে) বহলোলের সৈন্যদলকে একেবারে ঘিরিয়া ফেলিলেন এবং তাহাদের জলাশয়ে যাইবার একমাত্র পথ বন্ধ করিয়া দিলেন (১৫ই এপ্রিল)। পরদিন প্রাতে মারাঠারা দলে দলে ঢেউয়ের মত বারবার বিজাপুরী-সৈন্যদের আক্রমণ করিল। সারাদিন ধরিয়া যুদ্ধ চলিল; অনেকে মরিল, অনেকে আহত হইল। বহলোলের আফঘান-সৈন্যগণ প্রাণপণে লড়িয়া নিজস্থান রক্ষা করিল। অবশেষে রণক্ষেত্রে সন্ধ্যা নামিল। দুই পক্ষ ক্লান্ত হইয়া নিজ নিজ শিবিরে [১]

  1. রক্ষীদের হাত করিয়া) পনহালা দখল করেন। আমারও তাহাই সত্য বলিয়া মনে হয়, কারণ এমন অজেয় দুর্গ রক্ষা করিবার জন্য তেমন কোন চেষ্টাই হয় নাই।