পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মহারাষ্ট্র দেশ ও মারাঠা জাতি

পঁচিশ লক্ষ ছিল। এই দুই জাত লইয়া শিবাজীর সৈন্যদল গঠিত হয়—যদিও সেনাপতিদের মধ্যে অনেকেই ব্রাহ্মণ ও কায়স্থ ছিলেন।

 “মারাঠা (অর্থাৎ কৃষক) জাত সরল, খোলামন, স্বাধীনচেতা, উদার ও ভদ্র; সদ্ব্যবহার পাইলে পরকে বিশ্বাস করে; বীর ও বুদ্ধিমান, পূর্ব্বগরিমা স্মরণ করিয়া গর্ব্বোৎফুল্ল। ইহারা মুরগী ও মাংস খায়, মদ ও তাড়ি পান করে (কিন্তু নেশাখোর নহে)। বোম্বাই প্রদেশের রত্নগিরি জেলার মারাঠা জাত হইতে যত লোক সৈন্যদলে ভর্তি হয়, অন্য কোন জাত হইতে তত নহে! অনেকে পুলিস এবং পাইক হরকরা হয়। মারাঠারা কুন্‌বীর মত শান্ত ভদ্রব্যবহারকারী, মোটেই রাগী নহে, কিন্তু অধিকতর সাহসী ও দয়াদাক্ষিণ্যশালী। তাহারা বেশ মিতব্যয়ী, নম্র, ভদ্র ও ধর্মপ্রাণ। কুন্‌বীরা এখন সকলেই কৃষক হইয়াছে—তাহারা স্থির, শান্ত, শ্রমী, সুশৃঙ্খল, দেবদেবীভক্ত, এবং চুরি-ডাকাতি বা অন্য অপরাধ হইতে মুক্ত। তাহাদের স্ত্রীলোকগণ পুরুষের মত বলিষ্ঠ এবং কষ্টসহিষ্ণু। ইহাদের মধ্যে বিধবা-বিবাহ প্রচলিত আছে।” (বম্বে গেজেটিয়র)

 মারাঠা-চরিত্রের গুণের কথা বলিলাম, এইবার তাহাদের দোষগুলির আলোচনা করা যাক।

মারাঠা চরিত্রের দোষ

 মারাঠা-রাজশক্তি বিদেশ-লুণ্ঠনের বলে বঁচিয়া থাকিত। এরূপ দেশের রাজপুরুষেরা নিজের জন্য লুঠ করিতে, অর্থাৎ ঘুষ লইতে কুষ্ঠিত হয় না। প্রভূর প্রবৃত্তি ভৃত্যে দেখা দেয়। শিবাজীর জীবিতকালেও উঁহার ব্রাহ্মণ কর্ম্মচারীরা নির্ণভাবে ঘুষ চাহিত ও আদায় করিত।

 মারাঠাদের মধ্যে ব্যবসায়-বুদ্ধি বড় কম, ইহার ফলে তাহাদের রাজত্ব বেশীদিন টেকে নাই। এই জাতির মধ্যে একজনও বড় শ্রেষ্ঠী