পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৮
শি বা জী

 অভিষেকের পূর্ব্বে আবশ্যক সকল অনুষ্ঠানই সম্পন্ন হইতে লাগিল। প্রথমে শিবাজী নিজ গুরু রামদাস স্বামী এবং মাতা জীজা বাঈকে বন্দনা করিয়া তাঁহাদের আশীর্ব্বাদ লইলেন।

শিবাজী ও সাতকর্ণীব তুলনা

 জীজা বাঈ-এর আজ আনন্দের সীমা নাই। যৌবনের শেষ হইতে স্বামীর অবহেলা সহ্য করিয়া তিনি সন্ন্যাসিনীর মত সুদীর্ঘ পঞ্চাশ বৎসর কাটাইয়াছেন। পুত্রের আজীবন ভক্তিতে তিনি সে দুঃখ ভুলিয়া ছিলেন। আর,সেই পুত্রের পবিত্র চরিত্র, দয়াদাক্ষিণ্য, এবং অজেয় বীরত্বের খ্যাতিতে জগৎ পূর্ণ। আজ তাঁহার পুত্র স্বদেশবাসীদের পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচন করিয়াছে, হিন্দু নরনারীকে অত্যাচারের হাত হইতে রক্ষা করিয়াছে, সর্ব্বত্র ধর্ম ও ন্যায়ের রাজ্য স্থাপন করিয়াছে; এমন রাজার জননী বলিয়া অজি তিনি দেশপূজ্যা। পনের শত বৎসর পূর্ব্বের এই মহারাষ্ট্র দেশের আর এক রাজ-জননী অন্ধ্ররাজ শ্রীশাতকর্ণীর মাতা গোতমীর ভাষায় তিনিও বিজয়ী ধার্ম্মিক পুত্রের গুণগান করিয়া যেন বলিতেছেনঃ–

 “আমি মহারাণী গোতমী বালশ্রী, রাজরাজ শ্রীশাতকর্ণীর মাতা। আমার পুত্রের মাতৃশুশ্রূষা অবাধ, পৌরজনের সুখ-দুঃখে তাহার সম্পূর্ণ সহানুভূতি, সে শক-যবন-পহলব-ধ্বংসকারী, ব্রাহ্মণ ও অব্রাহ্মণের গৃহসম্পদ বাড়াইয়াছে ক্ষহরাত বংশ নিঃশেষ করিয়াছে, চারিবর্ণের মিশ্রণ থামাইয়া দিয়াছে, অনেক যুদ্ধে শত্রুদলকে জয় করিয়াছে, সে সৎপুরুষদিগের আশ্রয়, লক্ষ্মীর অধিষ্ঠান, দক্ষিণাপথের ঈশ্বর.•••••”[১]

  1. মহাদেব্যা গোতমী বালশ্রী মাতুঃ রাজরাজস্য শ্রীশাতকর্ণেঃ গোতমীপুত্রস্ব-অবিপন্ন মাতৃশুশ্রূষাকবস্য-পৌবজন নির্বিশেষ সমসুখদুঃখস্য-শকযবন-পল্‌হব-নিসূদনস্য-দ্বিজাবর-কুটুম্ব-বিবর্দ্ধনস্য-খখবাত বংশ-নিরবশেষকাবস্য-বিনিবর্ত্তিত-চাতুর্বর্ণ সংকরস্য-অনেক সমরাবজীত শত্রু-সংঘন্য-সৎপুরুষাণাম্ আশরস্য-শ্রিয়া অধিষ্ঠানস্য—দক্ষিণাপথেশ্বরস্য•••••[Epigraphia India, iii, 60. নাসিক-গুহার শিলালিপির সংস্কৃত অনুবাদ}