পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩২
শিবাজী

বসান সোনার পাতে জড়ান। আর এই আটটি থামের মাথায় চমকে জরির চাঁদোয়া বাঁধা, তাহার স্থানে স্থানে মুক্তার গুচ্ছ হীরক পদ্মরাগ প্রভৃতি ঝুলিতেছে। রাজার বসিবার গদী ব্যাঘ্রচর্ম্মের উপর মখমল দিয়া ঢাকা। গদীর পশ্চাতে রাজছত্র।


 সিংহাসনের দুই পাশে নানা প্রকার রাজচিহ্ন সোনার জল করা বল্লম হইতে ঝুলিতেছিল,—যেমন, ডানদিকে দুইটি প্রকাণ্ড মাছের মাথা (মুঘলদিগের মাহী মুরাতিব), বামে ঘোড়ার লেজের চামর (তুর্কীজাতীয় রাজচিহ্ন) এবং ওজনের মানদণ্ড (ইহা ন্যায়বিচারের চিহ্ন, প্রাচীন পারস্য-রাজ্য হইতে লওয়া)। রাজদ্বারের বাহিরে দুইদিকে পাতায় মুখ ঢাকা জলের ঘট সাজান, এবং তাহার পর দুটি হস্তিশাবক ও দুটি সুন্দর ঘোড়া; তাহাদের সাজ ও লাগাম সোনা ও মণি দিয়া কাজ করা।

শিবাজীর সিংহাসনে অধিবেশন ও ছত্রধাবণ

 নির্দিষ্ট মুহূর্তে শিবাজী পূজ্যগণকে নমস্কার করিয়া সিংহাসনের সিঁড়ি বাহিয়া উঠিয়া গদীতে বসিলেন। অমনি মুঠা মুঠা রত্নখচিত সোনার পদ্ম ও অন্যান্য সোনা-রূপার ফুল সভাসদগণের মধ্যে ছড়াইয়া দেওয়া হইল। আবার ষোলজন সধবা ব্রাহ্মণী সু-বাস পরিয়া সোনার পঞ্চপ্রদীপ তাঁহার চারিদিকে ঘুরাইয়া অমঙ্গল দূর করিলেন। সমবেত ব্রাহ্মণগণ উচ্চৈঃস্বরে শ্লোক আওড়াইয়া রাজাকে আশীর্বাদ করিলেন, শিবাজী নতশিরে তাহার প্রত্যুত্তর দিলেন। জনসাধারণ আকাশ ফাটাইয়া চেঁচাইতে লাগিল—“জয়, শিবরাজের জয়। শিব ছত্রপতির জয়!” একসঙ্গে সমস্ত বাদ্যযন্ত্র বাজিয়া উঠিল; আর, বাহিরে মহারাষ্ট্র দেশের সব দুর্গ হইতে ঠিক সেই মুহুর্তে তোপের আওয়াজ করা হইল। দেশ জানিল যে নিজের রাজা পাইয়াছে।


 প্রথমে অধ্বর্য্যু গাগা ভট্ট, তাহার পর অষ্টপ্রধান ও অন্যান্য ব্রাহ্মণগণ