পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪০
শিবাজী

শিবাজীর কর্ণাটক-অভিযানের পূর্বে অন্য রাজ্যের সহিত সন্ধি

 শের খাঁ ১৬৭৬ সালে জিঞ্জি প্রদেশ আক্রমণ কবিয়া তাহার অনেক অংশ কাড়িয়া লইলেন। জিঞ্জিব অধিকারী নাসির মহম্মদ নিরুপায় হইয়া গোলকুণ্ডার সাহায্য চাহিলেন। এই সময় কুতুব শাহর মন্ত্রী মাদন্না নামক ব্রাহ্মণই ছিলেন সর্বেসর্বা, তাঁহাদের বংশ পরম বৈষ্ণব ও ভক্ত হিন্দু। মাদন্নার প্রাণের বাসনা ছিল মুসলমানের (অর্থাৎ বিজাপুবের) হাত হইতে কর্ণাটক উদ্ধার করিয়া, ১৬৪৮ সালের পূর্বের মত আবার হিন্দুর শাসনে রাখিবেন। শিবাজীর মত ভুবনবিজয়ী বীব ও ভক্ত হিন্দু ছাড়া আর কাহার দ্বারা এই মহাকাব্য সফল হওয়া সম্ভব নহে। সুলতান প্রিয়মন্ত্রীর পরামর্শে বাজি হইলেন। এই শর্তে সন্ধি হইল যে শিবাজী মারাঠা-সৈন্যের সাহায্যে বিজাপুরী কর্ণাটক জয় করিয়া কুতুব শাহকে দিনে, আর নিজে তথাকার রাজকোষে মজুত ও লুঠের টাকা এবং মহীশূরের কতক মহল লইবেন এই অভিযানের সমস্ত ব্যয় কুতুব শাহব, এ ছাড়া কামান ও গোলক এবং পাঁচ হাজার সৈন্য দিয়া তিনি শিবাজীকে সাহায্য করিবেন। শিবাজীর চতুর দূত প্রহ্লাদ নিরাজ মাদন্নার সহিত আলোচনা করিয়া এই বন্দোবস্ত পাকা করিলেন।

 শিবাজী দেখিলেন, কর্ণাটক জয় করা যেরূপ কঠিন কাজ তাহাতে নিজে বাহির না হইলে শুধু সেনাপতি পাঠাইয়া কোনই ফল হইবে না, আর ইহাতে অন্ততঃ এক বৎসর সময় লাগবে। অথচ এই দীর্ঘকাল স্বদেশ ছাড়িয়া সুদূর কর্ণাটকে থাকিল, শত্রুরা সেই সুযোগে তাহার রাজ্যে মহা অনিষ্ট ঘটাইতে পারে এই কারণে শিবাজী মুঘলসরকাবের সহিত ভাব করবার জন্য ব্যগ্র হইলেন। ১৬৭৬ সালের শেষভাগে মুঘল ও বিজাপুরের যেরূপ অবস্থা তাহাতে শিবাজীর খুব সুবিধা হইল। বিজাপুরের নূতন উজীর বংশোল খাঁর আফঘান-দল