পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দক্ষিণ-বিজয়
১৪১

এবং তাঁহার শত্রু দক্ষিণী ও হাবশী ওমরাদের মধ্যে খুনোখুনী বিবাদ বাধিয়া গিয়াছিল। মুঘল-সুবাদার বাহাদুর খাঁ বহলোলর উপর চটা ছিলেন; তিনি এই সুযোগে দক্ষিণীদের পক্ষ লইয়া বিজাপুব আক্রমণ করিলেন (৩১ মে, ১৬৭৬) এবং এই যুদ্ধে এক বৎসরের অধিক কাল ব্যাপৃত রহিলেন। সে সময়ে কেহই শিবাজীর দিকে তাকাইবার অবসব পাইল না।

 বাহাদুর খাঁ দেখিলেন, বিজাপুর-আক্রমণের পূর্ব্বে শিবাজীকে হাত করিতে না পারিলে, তাঁহার নিজের শাসনাধীন প্রদেশ অরক্ষিত অবস্থায় থাকিবে। আর, শিবাজীও দেখলেন যে যখন তিনি কর্ণাটক লইয়া জড়াইয়া পড়িবেন তখন মুঘল-সুবাদার শত্রুতা করলে মহারাষ্ট্র দেশের খুবই অনিষ্ট হইবে। অতএব “তুমি আমাকে জ্বালাইও না, আমি ‘ছুঁ-ইব না” এই শর্ত্তে দুই পক্ষ বন্ধুত্ব করিলেন। শিবাজীর দূত নিরাজী বাবজী পণ্ডিত গোপনে বাহাদুর খাঁকে অনেক টাকা ঘুষ এবং প্রকাশ্যে বাদশাহের জন্য কিছু টাকা কর বা উপহার দিয়া সন্ধির লেখাপড়া শেষ করিলেন।

হনুমন্তে বংশের সাহায্য

 ভাগ্য চিরদিনই উদ্যোগী পুরুষসিংহেব উপর প্রসন্ন। শিবাজীর কর্ণাটক জয়ের পক্ষে এক মহা সহায় জটিল। রঘুনাথ নারায়ণ হনুমন্তে নামক একজন সুদক্ষ অভিজ্ঞ এবং প্রভাব-প্রতিপত্তিশালী ব্রাহ্মণ শাহজীর সময় হইতে ব্যঙ্কাজীর অভিভাবক এবং উজীর হইয়া কর্ণাটক-রাজ্য শাসন করিয়া আসিতেছিলেন। ফলতঃ রঘুনাথ ও তাঁহার ভ্রাতা জনার্দ্দনকে লোকে ঐ দেশের রাজার মতই জ্ঞান করিত। ব্যঙ্কাজী বড় হইয়া নিজহাতে শাসনভার লইলেন এবং রঘুনাথের নিকট হইতে রাজস্বের হিসাব তলব করিলেন। রঘুনাথ এত বৎসরে প্রভুর অগাধ