পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দক্ষিণ-বিজয়
১৪৩

পৌঁছিলেন (ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ)। তিনি কড়া হুকুম জারি করিয়াছিলেন যেন তাহার সৈন্য বা চাকর বাকরের কেহ পথে কোন গ্রামবাসীর জিনিসে হাত না দেয় বা স্ত্রীলোকের মানহানি না করে। প্রথমে দু-চারজন মারাঠা এই নিয়ম ভঙ্গ করিয়াছিল বটে, কিন্তু অপরাধীদের ফাঁসী অথবা হাত-পা কাটিয়া সাজা দেওয়ায় এমন ভয়ের সঞ্চার হইল যে এই পঞ্চাশ হাজার সশস্ত্র লোক এক মাস ধরিয়া অতি শান্ত ও সাধুভাবে বিদেশ পার হইয়া চলিল, কাহারও একগাছি তৃণ বা এক দানা শস্তে হাত দিল না। ইহাতে চারিদিকে শিবাজীর সুনাম ছড়াইয়া পড়িল।

 কুতুব শাহ প্রস্তাব করেন যে তিনি রাজধানী হইতে কয়েক ক্রোশ পথ অগ্রসর হইয়া শিবাজীকে অভ্যর্থনা করিবেন। কিন্তু শিবাজী নম্র ভাবে তাহাকে নিষেধ করিয়া পাঠাইলেন; বলিলেন, “আপনি আমার জ্যেষ্ঠ, এতটা পথ আগুয়ান হইয়া কনিষ্ঠকে সম্মান করা গুরুজনের পক্ষে অনুচিত।” সুতরাং শুধু মাদন্না, তাহার ভ্রাতা আকন্না এবং হায়দাবাদের বড় বড় লোকেরা শহর হইতে পাঁচ-ছয় ক্রোশ বাহিরে আসিয়া শিবাজীকে অভ্যর্থনা করিয়া রাজধানীতে আনিলেন।

হায়দারবাদ নগরে শিবাজীর অভ্যর্থনা

 শিবাজীর অভ্যর্থনার জন্য রাজধানী হায়দারবাদ আজ অতি সুন্দর বেশ ধারণ করিয়াছে। রাস্তা ও গলিগুলি কুঙ্কুম ও জাফরানে লালে লাল। স্থানে স্থানে ফুল পাতা ও নিশানে সজ্জিত খিলান ও ধ্বজদণ্ড তৈয়ারি করা হইয়াছে। লক্ষ লক্ষ নাগরিকেরা ভাল ভাল পোষাক পরিয়া পথের ধারে দাড়াইয়া, আর বারান্দাগুলি সাজগোছ করা মহিলায় ভরা।

 শিবাজীও তাহার সৈন্যগণকে এই দিনের জন্য চমৎকার বেশভূষা পরাইয়াছিলেন। জমকাল পোষাক ও অস্ত্রে তাঁহার সেনানীগণকে ধনী