পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬২
শিবাজী

 ২ এপ্রিল ১৬৭৯ সালে আওরঙ্গজীব হুকুম প্রচার করিলেন যে তাঁহার বাজ্যে সব্বত্র হিন্দুদের মানুষ গণিয়া প্রত্যেকের জন্য বৎসর বৎসর তিন শ্রেণীব আয় অনুসারে ১৩ ৫০-৬'৬২ বা ৩ ৩১ “জজিয়া কর” লওয়া হইবে। বাদশাহর এই নূতন ও অন্যায় প্রজাপীডনের সংবাদে শিবাজী তাঁহাকে নিম্নের সুন্দর পত্রখানি লেখেন। ইহা সুললিত ফারসী ভাষায় নীল প্রভুর দ্বারা ৰচিত হয়।

জজিয়া করের বিরুদ্ধে অওরংজীবের নামে শিবাজীর পত্র

 “বাদশাহ আলমগীর, সালাম। আমি আপনার দৃঢ় এবং চিরহিতৈষী শিবাজী। ঈশ্বরের দয়া এবং বাদশাহ সূর্য্যকিরণ অপেক্ষাও উজ্জ্বলতর অনুগ্রহের জন্য ধন্যবাদ দিয়া নিবেদন করিতেছি যেঃঃ-

 যদিও এই শুভাকাঙ্ক্ষী দুর্ভাগ্যবশত আপনার মহিমামণ্ডিত সন্নিধি হইতে অনুমতি না লইয়াই আসিতে বাধ্য হয়, তথাপি আমি, যতদুর সম্ভব ও উচিত, ভৃত্যের কর্ত্তব্য ও কৃতজ্ঞতার দাবি সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন করিতে সদাই প্রস্তুত আছি। ***

 এখন শুনিতেছি যে আমার সহিত যুদ্ধের ফলে আপনার ধন ও রাজকোষ শূন্য হইয়াছে, এবং এই কারণে আপনি হুকুম দিয়াছেন যে জজিয়া নামক কর হিন্দুদের নিকট আদায় করা হইবে, এবং তাহা আপনার অভাব পূরণ করিতে লাগিবে।

 বাদশাহ সালাম। এই সাম্রাজ্য-সৌধের নির্মাতা আকবর বাদশাহ পূর্ণ-গৌরবে ৫২ [চান্দ্র] বৎসর রাজত্ব করেন। তিনি সকল ধর্মসম্প্রদায়—যেমন, খৃষ্টান, ইহুদী, মুসলমান, দাদুপন্থী, নক্ষত্রবাদী [ফলকিয়া= গগন-পূজক?], পরী-পুজক [মালাকিয়া], বিষয়বাদী [আনসরিয়া], নাস্তিক, ব্রাহ্মণ ও শ্বেতাম্বরদিগেব প্রতি—সাৰ্বজনীন মৈত্রী সেলহ,—ই-কুল=সকলের সহিত শান্তি] র সুনীতি অবলম্বন করেন।