পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীবনের শেষ দুই বৎসর
১৬৩

তাঁহার উদার হৃদয়ের উদ্দেশ্য ছিল সকল লোককে রক্ষা ও পোষণ করা। এইজন্যই তিনি “জগৎগুরু” নামে অমর খ্যাতি লাভ করেন।

 তাহার পর বাদশাহ জাহাঙ্গীর ২২ বৎসর ধরিয়া তাঁঁহার দয়ার ছায়া জগৎ ও জগৎবাসীর মস্তকের উপর বিস্তার করিলেন। তাঁহার হৃদয় বন্ধুদিগকে এবং হস্ত কার্য্যেতে দিলেন, এবং এইরূপে মনের বাসনাগুলি পূর্ণ করিলেন। বাদশাহ শাহজহানও ৩২ বৎসর রাজত্ব করিয়া সুখী পার্থিব জীবনের ফলস্বরূপ অমরতা—অর্থাৎ সজ্জনতা এবং সুনাম, অর্জন করেন।

(পদ্য)


যে জন জীবনে সুনাম অর্জ্জন করে
সে অক্ষয় ধন পায়,
কারণ,মৃত্যুর পর তাহার পুণ্য চরিতের কথা তাহার
নাম জীবিত রাখে।

 আকবরের মহতী প্রবৃত্তির এমনি পণ্য প্রভাব ছিল যে তিনি যেদিকে চাহিতেন, সেদিকেই বিজয় ও সফলতা অগ্রসর হইয়া তাহাকে অভ্যর্থনা করিত। তাহার রাজত্বকালে অনেক অনেক দেশ ও দুর্গ জয় হয়। এই সব পূর্ববর্তী সম্রাটদের ক্ষমতা ও ঐশ্বর্য্য ইহা হইতেই অতি সহজে বুঝা যায় যে আলমগীর বাদশাহ তাঁহাদের রাজনীতি অনুসরণ মাত্র করিতে গিয়া বিফল এবং বিব্রত হইয়া পড়িয়াছেন। তাঁহাদেরও জজিয়া ধার্য করিবার শক্তি ছিল। কিন্তু তাঁহারা গোঁড়ামীকে হৃদয়ে স্থান দেন নাই, কারণ তাঁহারা জানিতেন যে উচ্চ নীচ সব মনুষ্যকে ঈশ্বর বিভিন্ন ধর্মবিশ্বাস ও প্রবৃত্তির দৃষ্টান্ত দেখাইবার জন্যই সৃষ্টি করিয়াছেন। তাঁহাদের দয়া-দাক্ষিণ্যের খ্যাতি তাহাদের স্মৃতিচিহ্নরূপে অনন্তকালের ইতিহাসে লিখিত রহিবে, এবং এই তিন পবিত্র-আত্মা [সম্রাটের]জন্য প্রশংসা ৩ শুভপ্রার্থনা চিরদিন ছোটবড় সমস্ত মানবজাতির কণ্ঠে ও হৃদয়ে বাস