পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৪
শি বা জী

ক্ষতিপূরণ দাবি করিলেন; শিবাজী এজন্য নিজ দায়িত্বস্বীকার করেন না, কখনও বা খুব কম টাকা খেসারৎ দিতে চাহেন। এই লইয়া বিশ বৎসরেরও অধিক সময় তর্ক-বিতর্ক চিঠি লেখালেখি চলিল। ইংরাজের আশ্চর্য্য সহিষ্ণুতা ও জিদের সহিত দীর্ঘকাল পর্যন্ত নিজেদের এই দাবি ধরিয়া রহিলেন, বারে বারে শিবাজীর নিকট দূত[১]পাঠাইতে লাগিলেন। পরে হুবলী, ধরণগাঁও প্রভৃতি স্থানের ইংরাজ-কুঠীও মারাঠারা লুঠ করে, এবং তাহার জন্য ক্ষতিপূরণ চাওয়া হইল। এ বিবাদ শিবাজীর জীবনকালে নিষ্পত্তি হইল না, অথচ এজন্য দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধও বাধিল! কারণ সে যুগে ইংরাজ ও শিবাজী অনেক বিষয়ে পরস্পরের মুখাপেক্ষী ছিলেন। বম্বে দ্বীপে তরকারী, চাউল, মাংস, জ্বালানী কাঠ কিছুই জন্মিত না; এগুলি পরপারে শিবাজীর দেশ হইতে না আসিলে, বম্বের লোক অনাহারে মারা যাইত। আর, শিবাজীর রাজ্যে লবণ মোমবাতী সৌখীন পশমী কাপড় (বনাত ও সকলাৎ) তোপ ও বারুদ ইংরাজেরাই আনিয়া দিতে পারিতেন। তা ছাড়া ইংরাজদের বেচা-কেনায় শিবাজীর প্রজাদের এবং পণ্যমাশুল হইতে রাজসরকারের অনেক টাকা আয় হইত। কাজেই এই ঝগড়া যুদ্ধ পর্যন্ত গড়াইল না।

রাজাপুব-কুঠার ক্ষতিপূরণের দাবি

 ইংরাজ-বণিকেরা বেশ বুঝিতেন যে, শিবাজীকে চটাইলে তাঁহার বিস্তৃত রাজ্যে তাঁহাদের বেচা-কেনা একেবারে বন্ধ হইয়া যাইবে; অথচ তাঁহাদের এমন শক্তি ছিল না যে যুদ্ধ করিয়া শিবাজীকে কাবু করেন বা তাহার নিকট হইতে প্রাপ্য টাকা আদায় করেন। তাহাদের একদিকে ভয় যে যদি তাহারা শিবাজীকে তোপ ও গোলা বিক্রয় না করেন তবে তিনি চটিয়া তাহাদের বাণিজ্য বন্ধ করিয়া দিবেন; অপর

  1. অষ্টিক (১৬৭২), নিকলস (১৬৭), হেনরি আকসিণ্ডেল(১৬৭৫)।