পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজীর নৌবল, ইংরাজ ও সিদ্দিদের সহিত সংঘর্ষ
১৭৫

দিকেও বিপদ কম নহে,—মারাঠা-রাজকে এইরূপে সাহায্য করা হইয়াছে টের পাইলে মুঘল বাদশাহ রাগিয়া তাহার রাজ্য হইতে ইংরাজ-কুঠি উঠাইয়া দিবেন এবং বণিকদের কয়েদ করিবেন। ফরাসীরা এরূপ অবস্থায় অতি গোপনে কিছু ছোট ছোট তোপ ও সীসা শিবাজীকে বিক্রয় করেন।


 চতুর ইংরাজ-কর্তারা নিজ স্থানীয় কর্মচারীদের লিখিয়া পাঠাইলেন— “এই উভয় সঙ্কটের মধ্যে এমন সাবধানে চলিবে যেন কোনপক্ষই রাগ করে। শিবাজীকে তোপ বারুদ বেচিবেও না, আবার বেচিতে খোলাখুলি অস্বীকারও করিবে না। অস্পষ্ট উত্তর দিয়া যত সময় কাটান যায় তাহার চেষ্টা করিবে। আব, আমরা আমাদেব জাহাজ ও তোপ লইয়া গিয়া হাবশী রাজধানী জয় করিতে তাঁহাকে সাহায্য করিতে পারি, এই লোভ দেখাইয়া আলোচনার সূত্রপাত করিবে, এবং তাঁহাকে এইরূপে দীঘকাল হাতে রাখিবে।”

 শিবাজীও যে-টাকা একবার গ্রাস করিয়াছেন তাহা ফেরত দিতে নারাজ। এই অবস্থায় রাজাপুর-কুঠীর ক্ষতিপূরণের জন্য আলোচনার শেষ নিষ্পত্তি হওয়া অসম্ভব ছিল। ইংরাজের এক লক্ষ টাকা দাবি করিয়াছিল। শিবাজীর মন্ত্রীরা প্রথমে ক্ষতির পরিমাণ বিশ হাজার টাকা ধার্য্য করিলেন, পরে আটাশ হাজার এবং শেষে চল্লিশ হাজারে উঠিলেন। কিন্তু তাহাও নগদ নহে; ইহার মধ্যে ৩২ হাজার টাকা কতক নগদ কতক বাণিজ্য-দ্রব্য দিয়া শোধ হইবে, আর বাকী আট হাজার টাকা তিন হইতে পাঁচ বৎসর পর্যন্ত রাজাপুর বন্দরে ইংরাজদের আমদানী মালের দেয় মাশুল মাফ করিয়া পূরণ করা হইবে।

 শিবাজীর রাজ্যাভিষেকের দরবারে (১৬৭৪ জুন) ইংরাজদূত হেনরি