পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজীর নৌবল, ইংরাজ ও সিদ্দিদের সহিত সংঘর্ষ
১৭৭

আরও কাছে আসিতে বলিলেন। যখন আমি তাহার সামনে পৌঁছিলাম, তিনি কুতুহলে আমার লম্বা পরচুল নিজ হাতে নাড়িয়া-চডিয়া দেখিলেন এবং অনেক কথা জিজ্ঞাসা করিলেন।***তিনি উত্তরে বলিলেন যে রাজাপুরে আমাদের সব অসুবিধা দূর করিবেন, এবং আমাদের যুক্তিসঙ্গত কোন অনুরোধই অগ্রাহ্য করিবেন না। ***

 পরদিন আবার আমাদের ডাক পড়িল; দু'ঘণ্টা কথাবার্তার পর আমাদের দরখাস্তের মারাঠা-অনুবাদ তাহাকে পড়িয়া শুনান হইল; তিনি আমাদের সকল প্রার্থনা মঞ্জুর করিয়া ফর্ম্মা দিবেন, এ আশ্বাস দিলেন।”

জঞ্জিবার হাবশীগণ

 ভারতের পশ্চিম-কুলে বম্বে শহর হতে ৪৫ মাইল দক্ষিণে জঞ্জিরা নামে পাথরের একটি ছোট দ্বীপ আছে। তাহার আধ মাইল পূর্বদিকে সমুদ্রের এক খাড়ী কোলাবা জেলার মধ্যে ঢুকিয়াছে। এই খাড়ীর মুখে উত্তর তীরে দণ্ডা নামক শহর, তাহার তিনদিকে সমুদ্রের জল; আর দণ্ডার দুইমাইল উত্তর-পশ্চিমে রাজপুরী নামক আর একটি নগর;[রাজাপুর বন্দর এখান হইতে অনেক দূরে, দক্ষিণে]। এইগুলি এবং ইহাদের সংলগ্ন জমি লইয়া একটি ছোট রাজ্য; তাহার অধিকারীরা হাবশী জাতীয়, অর্থাৎ আফ্রিকার এবিসিনিয়া দেশ হইতে আগত; ইহাদের ভীষণ কাল রং, মোটা ঠোঁট, কোঁঁকড়া চুল।

 এই হাবশীরা তথায় কয়েক ঘর মাত্র; অসংখ্য ভারতীয় প্রজাদের মধ্যে বাস করিয়া তাহাদের নিজ প্রভুত্ব বজায় রাখিতে হইত। তাহারা সকলেই যুদ্ধে এবং জাহাজ চালাতে দক্ষ; অন্য কোন ব্যবসা করিত না; প্রত্যেকেই যেন এক একজন ছোটখাট ওমরা বা রাজপুত এইরূপ পদগৌরবে থাকিত। তাহাদের দলপতি পিতার উত্তরাধিকারসূত্রে হইতেন না; জাতির মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান কর্মদক্ষ বীরকে বাছিয়া

১২