পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৪
শিবাজী

মর্ম্মাহত হইলেন। গল্প আছে যে, রাত্রিতে আগুন লাগিয়া বারুদের গুদাম উড়িয়া যাওয়ার সময় তিনি চল্লিশ মাইল দূরে নিজ গড়ে ঘুমাইতেছিলেন। হঠাৎ ঘুম ভাঙিয়া গেল; তিনি বলিলেন “মনটা কেমন করিতেছে। নিশ্চয়ই দণ্ডায় কোন বিপদ ঘটিয়াছে।”

 এই বিজয়ের পর কাসিম ঐ অঞ্চলে আরও সাতটি দুর্গ মারাঠাদের হাত হইতে উদ্ধার করিলেন এবং পরাজিত লোকদের উপর চূড়ান্ত অত্যাচার করিলেন। শিবাজী ও শম্ভুজী তাহাদের রাজত্বকালে এই প্রদেশ পুনরায় দখল করিবার অনেক চেষ্টা করিয়াও কৃতকার্য হইতে পারেন নাই। জাহাজ দিয়া অপর পক্ষকে চূড়ান্ত পরাজিত করিতে সাহায্য করিবার জন্য শিবাজী ও বাদশাহ প্রত্যেকেই বম্বের ইংরাজদের সাধিতে লাগিলেন। কিন্তু ইংরাজেরা বণিকের উচিত শান্তিতে রহিলেন; ফরাসী কোম্পানী কিন্তু এই ফাঁকে গোপনে শিবাঙ্গীকে ৮০টা ছোট তোপ এবং দু’ হাজার মণ সীসা বেচিয়া একচোট লাভ করিয়া লইল। ডচেরা শিবাজীর নিকট প্রস্তাব করিল, “আপনি সৈন্য দিন, আমরা জাহাজ দিব; উভয়ে একজোটে বম্বে আক্রমণ করিয়া ইংরাজদের বেদখল করিব, আর তাহার পর দণ্ডা কাড়িয়া লইয়া আপনাকে দিব।” কিন্তু শিবাজী এ কথায় কান দিলেন না। তাহার পর কত বৎসর ধরিয়া ঢিমে তালে এই যুদ্ধ চলিতে থাকিল। দুই পক্ষই অমানুষিক অত্যাচার করিতে লাগিল।

শিবাজীব নৌ-যুদ্ধ

 ১৬৭৪ সালের মার্চ মাসে সিদ্দি সম্বল সাতবলী নদীর মুখের খাড়ীতে ঢুকিয়া শিবাজীর নৌ-সেনাপতি দৌলত খাঁকে আক্রমণ করিলেন বটে, কিন্তু শেষে তাহাকে পরাস্ত হইয়া ফিরিতে হইল; এই যুদ্ধে দুই পক্ষেরই প্রধান সেনাপতি আহত হন এবং একশত ও ৪৪ জন লোক মারা পড়ে।