পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কানাড়ায় মারাঠা-প্রভাব
১৯১

অতএব শিবাজী ৮ই ফেব্রুয়ারি ১৬৬৫ সালে, ৮৮খানা জাহাজে সৈন্য চড়াইয়া রত্নগিরি জেলার তীর হইতে রওনা হই। হঠাৎ বসরুবে আসিয়া হাজির হইলেন। এখানে যে তাঁহার আগমন হইবে তাহা কেহ স্বপ্নেও ভাবে নাই, সুতরাং অত্মরক্ষার জন্য কেই প্রস্তুত ছিল না। মারাঠারা একদিনের অবাধ লুঠই অগণিত ধনরত্ন পাইল পরদিন ঐ শহর ছাড়িয়া। শিবাঙ্গী সমুদ্র তীবে গোকর্ণ নামক ভাব বিখ্যাত তীর্থে নামিয়া তথাকার শিবমন্দিবের সামনে স্নান পূজাদি পুণ্যক্রিয়া সারিলেন। তাহার পর হাত গুলিকে দেশে পাঠাইয়া দিয়া, নিজে চাবি হাজার পদাতিকের সঙ্গে উত্তবাদকে কুচ কবিয়া আঙ্কোল হইযা কাবোয়ার নগরে[১](পৌঁছিলেন)।

 এই বন্দরে ইংরাজদের একটি বড় কুঠী ছিল তাঁহারা ভয়ে শিবাজীর রাজ্যে নানাস্থানে বেতনভোগী চর রাখিয়া তাঁহার গতিবিধি ও অভিসন্ধির পাক। খবর আগে হইতে অনাইত। এখন শিবাজীর এদিকে আগমনের সংবাদ পাইবামাত্র তারা কোম্পানীর টাকাকড়ি ও মাল একখানা ছোট ভাড়াটে জাহাজে বোঝাই করিয়া কুঠী ছাডিয়া তাহাতে আশ্রয় লইল। সেই রাত্রে বহলোল খাঁর অনুচব শের খাঁ(হাবশী), প্রভুর মাতাব মক্কা-যাত্রার জন্য জাহাজ ঠিক করিতে এই বন্দরে উপস্থিত হইলেন, এবং পৌঁছিবার পর প্রথম শুনিলেন যে শিবাজীও সেখানে আসিয়াছেন। তিনি তাড়াতাড়ি নিজ বাসা দুর্গের মত ঘিরিয়া, সঙ্গের পাঁচ শত বক্ষ-সৈন্যকে চারিদিকে দাঁড় করাইয়া, মাল ও টাকা সুরক্ষিত করিয়া, শিবাজীকে সেই রাত্রেই সংবাদ পাঠাইলেন যে তিনি যেন ঐ

  1. এই শহব এখন বম্বে প্রদেশের একটি তালুকের সদর। এখানে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর কাজ করিতেন, এবং রবীন্দ্রনাথ প্রথম বয়সে এখানে তাঁহার প্রবাসের সুখ-স্মৃতি লিখিয়াছেন।