পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯২
শি বা জী

শহরে না ঢুকেন, কারণ ঢুকিতে চেষ্টা করিলে শের খাঁ যতক্ষণ প্রাণ থাকিবে তাঁহার সঙ্গে লড়বেন। শের খার সাহস এবং নেতৃত্বের যশ কাহারও অজানা ছিল না। আর বহলোলও বিজাপুরের সর্বশ্রেষ্ঠ ওমরা। এই সব কারণে শিবাজী শের খাঁকে আক্রমণ করতে সাহসী হইলেন না, এবং কারোয়ার শহরের কোন ক্ষতি না করিয়া কিছু দূরে নদীতীরে শিবির ফেলিলেন।

 এখান হইতে পরদিন (২৩ ফেব্রুয়ারি) দূত পাঠাইয়া তিনি শের খাঁকে জানাইলেন, “হয় ইংরাজদের ধরিয়া আমার হাতে দাও, না হয় তুমি শহর ছাড়িয়া চলিয়া যাও, আমি ওখানে গিয়া ইংরাজদের উপর প্রতিহিংসা লইব, কারণ তাহারা আমার চিরশত্রু!” শের খাঁ কি উত্তর দিবেন ইংরাজদের জিজ্ঞাসা করিয়া পাঠাইলেন। তাহারা জানাইল, “আমাদের কাছে এই জাহাজে বারুদ ও গোলা ভিন্ন আর কোন ধনদৌলৎ নাই। শিবাজী আসিয়া তাহা লইয়া যাইতে পারেন, যদি তিনি মনে করেন যে তাহাতে টাকার মত কাজ দিবে।” এই উত্তর শুনিয়া শিবাজী অত্যন্ত রাগিয়া বলিলেন, “যাইবার আগে ইংরাজদের দেখিয়া লইব।” স্থানীয় বণিকেরা তখন ভয়ে চাঁঁদা[১]তুলিয়া তাহাকে কিছু নজর দিল। তাহা লইয়া শিবাজী ঐদিন চলিয়া গেলেন; যাইবার সময় বলিতে লাগিলেন, “শের খাঁ এবার আমার হোলীর সময়ের শিকার মাটি করিয়াছে। তাহার পর ভীমগড় (১৪ মার্চ) হইয়া শিবাজী দেশে ফিরিলেন, কারণ এই মাসেই জয়সিংহ তাঁহার আশ্রয় পুরন্দর-দুর্গ আক্রমণ করেন।


 এই আক্রমণের সময় বিজাপুরী দক্ষিণ-কেঁকনের অনেকটা (অর্থাৎ

  1. এই চাঁঁদায় ইংরাজের ৯ শত টাকা দিয়াছিল, কারণ কারোয়ার শহরে তাহাদের সম্পত্তির মূল্য ছিল চল্লিশ হাজার টাকা।