পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০০
শিবাজী

রাজস্ব ও ধনভাণ্ডার

 শিবাজীর সভাসদ কৃষ্ণাজী অনন্ত ১৬৯৪ সালে লিখিয়াছেন যে, তাঁহার প্রভু রাজস্বের পরিমাণ বৎসরে এক কোটি হোণ এবং চৌথ আশী লক্ষ হোণ ধার্য ছিল। হোণ একটি খুব ছোট স্বর্ণমুদ্রা, ইহার দাম প্রথমে চারি টাকা ছিল, পরে পাঁচ টাকা হয়; সুতরাং এই দুই বাবদে শিবাজীর আয় সাত হইতে নয় কোটি টাকার মধ্যে ছিল, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আদায় হইত অনেক কম, এবং তাহাও সব বৎসরে সমান নহে। তাঁহাব মৃতুর পর তাঁহার ভাণ্ডারে যে ধনরত্ন পাওয়া যায় তাহার পরিমাণ মারাঠা ভাষার সভাসদ-বখরে এবং ফারসী ইতিহাস “তারিখ-ই-শিবাজী"তে বিস্তারিতভাবে দেওয়া আছে। ইহার মধ্যে স্বর্ণমুদ্রা ছিল ছয় লক্ষ মোহর এবং প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ হোণ, ও সাড়ে বারো খণ্ডী। ওজনের ভাঙ্গা সোনা; রৌপ্যমুদ্রা ছিল ৫৭ লক্ষ টাকা, এবং ৫০ খণ্ডী। ওজনের ভাঙ্গা রূপা; এ ছাড়া হীরা মণিমুক্তা বহু লক্ষ টাকা দামের। (এক খণ্ডী কলিকাতার সাত মণের কিছু কম, ৬৮ মণ]

অষ্টপ্রধান

 ১৬৭৪ সালে রাজাভিষকের সময় শিবাজীর আটজন মন্ত্রী ছিলেন; সেই উপলক্ষে তাঁহাদের পদের উপাধি ফারসী হইতে সংস্কৃতে বদলান হয়ঃঃ-

 (১) মুখ্যপ্রধান (ফারসী নাম, পেশোয়া); ইনিই প্রধান মন্ত্রী, রাজার প্রতিনিধি ও দক্ষিণ হস্ত-স্বরূপ; নিম্নপদস্থ কর্মচারীদের মধ্যে মতভেদ হইলে ইনি তাহার নিষ্পত্তি করিয়া রাজকার্য্যের সুবিধা করিয়া দিতেন। কিন্তু অপর সাত প্রধান তার অধীন বা অজ্ঞাবহ ছিল না, সকলেই নিজ নিজ বিভাগে একমাত্র রাজা ভিন্ন আর কাহাকেও প্রভু বলিয়া মানিত না।