পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/২১১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
শিবাজীর রাজ্য এবং শাসন-প্রণালী
২০৭

তিনজনের দল বাঁধার ভয় দূর হইল। দুর্গের রসদ মাল প্রভৃতি একজন কায়স্থ লেখক (কারখানা-নবিস)-এর জিম্মায় থাকিত। বড় বড় দুর্গগুলির দেওয়াল চার-পাঁচ এলাকায় ভাগ করা ছিল, প্রত্যেক এলাকা একজন রক্ষীর (তট-সর-ই নৌবৎ-এর) হাতে। দুর্গের বাহিরে পাওয়াবি ও মুশী (বংশগত চোব)—এই দুই জাতের লোক, চৌকি দিত।

 দুর্গের হাবলদার নীচের অমলাদের নিয়োগ বরখাস্ত করিতে পারিত, সরকারী চিঠিপত্র তাহার নামে শাসিত, এবং সরকারের জন্য লিখিত চিঠিপত্রে নিজের মোহর দিয়া পাঠাই। তাহার কর্তব্য ছিল প্রত্যহ সন্ধ্যায় দুর্গা চাবি বন্ধ করা এবং পাতঃকালে তাহা খোলা। এই ফটকের চাবিগুলি সে সর্বদা সঙ্গে রাখিত, রাত্রে পর্যন্ত বালিসের নীচে গুঁজিয়া ঘুমাইত। সব্বদাই চারিদিকে ঘুরিয়া দুর্গের ভিতরে ও বাহিরে সব ঠিক আছে কিনা দেখিত, আর অসময়ে খবর না দিয়। হঠাৎ গিয়া পাহারাদারেরা ঘুমাইতেছে কি সতর্ক আছে তাহার খোঁজ লইত। সর-ই-নৌবৎ রাত্রের চৌকীদারদের কাজ দেখিত।

ভূমির কর ও প্রজাশাসন-প্রণালী

 “দেশের সমস্ত জমি জরিপ করিয়া ক্ষেত্র ভাগ করিবে। আটাশ আঙ্গুলে একহাত, পাঁচ হাত ও পাঁচ মুঠিতে এক কাঠি, বিশ কাঠি লম্বা ও বিশ কাঠি প্রস্থে এক বিঘা, ১২০ বিঘায় এক চাবর। এইরূপে প্রত্যেক গ্রামে জমির কালি মাপ করা হইবে। প্রতি বিঘার ফসল নির্ধারণ করিয়া তাহার দুইভাগ রাজা লইবেন, আর তিন ভাগ প্রজা পাইবে।

 নুতন প্রজা বসতি করাইয়া তাহাদের খাইবার বাবদে এবং গাইবলদ ও বীজশস্য কেনার জন্য টাকা অগ্রিম দিবে, এবং তাহা দুই-চার বৎসরে পরিশোধ করিয়া লইবে। রায়তদের নিকট হইতে ফসল কাটার সময় ফসলের আকারে রাজকর লইবে।