পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজীর রাজ্য এবং শাসন-প্রণালী
২০৯

ধর্ম্ম-বিভাগ

 রাজ্যমধ্যে যেখানে দেব ও দেবস্থান ছিল, শিবাজী তাহাতে প্রদীপ নৈবেদ্য নিত্যস্নান প্রভৃতির যথাযোগ্য বন্দোবস্ত করিতেন। মুসলমান পীরের আস্তানা ও মসজিদে প্রদীপ ও শিরণী সেই সেই স্থানের নিয়ম অনুসারে রাখিবার জন্য অর্থ সাহায্য দিতেন। বাবা ইয়াকুৎ নামক পীরকে ভক্তি করিয়া নিজ খরচে কেশী-নামক শহরে বসাইয়া জমি দান করিলেন। “বেদক্রিয়া-দক্ষ ব্রাহ্মণদের মধ্যে যোগক্ষেম ব্রাহ্মণ, বিদ্যাবত্ত, বেদশাস্ত্র-সম্পন্ন জ্যোতিষী, অনুষ্ঠানী, তপস্বী, সৎপুরুষ গ্রামে গ্রামে বাছিয়া তাহাদের পরিবারের সংখ্যা অনুসাবে যে পরিমাণ অন্নবস্ত্র লাগে সেই আয়ের মহাল ঐ গ্রামে গ্রামে দিলেন। প্রতি বৎসর সরকারী আমলারা এই সাহায্য তাহাদের পৌছাইয়া দিত।” [সভাসদ]

 “লুপ্ত বেদচর্চা শিবাজীর অনুগ্রহে আবার জাগিয়া উঠিল। যে রাহ্মণ ছাত্র এক বেদ কণ্ঠস্থ করিয়াছে তাহাকে প্রতি বৎসর এক মণ চাউল, যে দুই বেদ কণ্ঠস্থ করিয়াছে তাহাকে দুই মণ, ইত্যাদি পরিমাণে দান করা হইত। প্রত্যেক বৎসর তাহার পণ্ডিত রাও শ্রাবণ মাসে ছাত্রদের পরীক্ষা করিয়া তাহাদের বৃত্তি কমবেশী করিয়া দিতেন। বিদেশী পণ্ডিতদের সামগ্রী এবং মারাঠা দেশের পণ্ডিতদেব খাদ্য দক্ষিণ-স্বরূপ দেওয়া হইত। মহাপণ্ডিতদের ডাকিয়া সভা করিয়া নগদ টাকা বিদায় দেওয়া হইত।” [চিটনিস-বখর]

রামদাস স্বামী

 শিবাজীর গুরু রামদাস স্বামী (জন্ম ১৬০৮ মৃত্যু ১৬৮১, খৃঃ) মহারাষ্ট, দেশের অতি বিখ্যাত এবং সর্বজনপূজ্য সাধু-পুরুষ। তাঁহার ভক্তিশিক্ষার বাণী অতি সরল সুন্দর ও পবিত্র। ১৬৭৩ সালে সাতারা-দুর্গ জয় করিবার পর শিবাজী গুরুকে উহার চারি মাইল দক্ষিণে পারলী