পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/২১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১০
শি বা জী

(অথবা সজ্জনগড়া) এ আশ্রম বানাইয়া দেন। এখনও লোকে বলে যে সাতারার ফটকের উপব চূড়ায় একখানা পাথরের ফলকে বসিয়া শিবাজী পাবলী-স্থিত গুরুর সঙ্গে দৈববলে কথাবার্ত্তা কহিতেন। রামদাস আর আর সন্ন্যাসীব মতই প্রত্যহ ভিক্ষা করিতে যাইতেন। শিবাজী ভাবিলেন, “গুরুকে এত ধন ঐশ্বর্য দান কবি, তিনি ভিক্ষা করেন কেন? তাঁহার কিসে সাধ পূরিবে?” তাহার পরদিন একখানা কাগজে রামদাসের নাম সমস্ত মহারাষ্ট্র রাজ্য ও রাজকোষ দিলাম বলিয়া দানপত্র লিখিত তাহাতে নয় মোহর ছাপিয়া ভিক্ষার পথে গুরুকে ধরিয়া তাহার পায়ের উপর রাখিলেন॥ রামদাস মৃদু হাসিয়া বলিলেন,” বেশ তাই এসব গ্রহণ করলাম। আজ হতে তুমি আমার গোমস্তা মাত্র। এই কাজ। . এই রাজ্য নিজের ভোগসুখের বা স্বেচ্ছাচার করিবার দ্রব্য নহে; তোমার মাথার উপণে এক বড় প্রভু আছেন ওঁহর জমিদাব’ তুমি উহার বিশ্বাসী ভৃত্য হইয়া চালাইতেছ—এই দায়িত্বজ্ঞানে ভবিষ্যতে রাজ্যশাসন করিবে।

 রাজ্যের প্রকৃত স্বত্বাধিকারী যখন এক সন্ন্যাসী, তখন সেই সন্ন্যাসীর গেরুয়া-বস্তু শিবাজীর রাজপতাকা হইল—ইহার নাম “ভাগবে ঝাণ্ডা।”

“সমর্থ” রামদাস স্বামীর জীবন ও শিক্ষা

 ১৬০৮ সালে চৈত্র মাসে শুক্ল নবমীতে সূর্য-উপাসক একটি ব্রাহ্মণবংশে রমদাসের জন্ম, তাঁহার পিতার দেওয়া নাম ‘নারায়ণ। বাল্যকাল হইতেই তাহার প্রাণ ধর্ম্মের দিকে আকৃষ্ট হইল; জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার মন্ত্রগ্রহণের সময় তিনিও মন্ত্র লইবার জন্য জেদ করিতে লাগিলেন। বারো বৎসর বয়সে এই পিতৃহীন বালক মাতার ব্যাকুল অনুরোধে বিবাহ করিতে সম্মত হইলেন বটে, কিন্তু মন্ত্র পড়িবার সময় বিবাহ-সভা হইতে দৌড়িয়া পলাইয়া গেলেন, এবং সংসার ত্যাগ করিলেন। তাহার পর