পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/২১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১২
শিবাজী

সংক্ষেপে অতি মহান্ উপদেশ দিলেন। কিন্তু যখন শিবাজী ভক্তির আবেগে বলিলেন, “আমি আপনার চরণে থাকিয়া সেবা করিব” তখন রামদাস তাহাকে ধমকাইয়া নিষেধ করিলেন, বলিলেন, “ইহার জন্যই কি তুমি আমার কাছে প্রার্থী হইয়া আসিয়াছ? তুমি ক্ষত্রিয়, কর্ম্মবীর, তোমার কর্তব্য দেশ ও প্রজাদের বিপদ হইতে রক্ষা করা, দেবব্রাহ্মণের সেবা করা। তোমার করিবার অনেক কাজ রহিয়াছে। ম্লেচ্ছগণ দেশ ছাইয়া ফেলিয়াছে; তোমার কর্তব্য তাহাদের হাত হইতে দেশ উদ্ধার করা। ইহাই রামচন্দ্রের অভিপ্রায়। ভগবদ-গীতায় অর্জুনের প্রতি শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ স্মরণ কর—যোদ্ধার কর্তব্যের পথে চল, কর্ম্মযোগ সাধনা কর।”

 ১৬৭৩ সালে পারলি-দুর্গ অধিকার করিবার পর শিবাজী সেখানে রামদাস স্বামীকে আনিয়া বসাইলেন, তাহার জন্য মন্দির ও মঠ নির্মাণ করিয়া দিলেন, দুর্গের নূতন নাম রাখিলেন সজ্জনগড়, অর্থাৎ “সাধুর গড়”; সন্ন্যাসী ও ভক্তদের ভরণ-পোষণের জন্য নিকটের গ্রামে দেবোত্তর জমি দিলেন।

কর্ম্মযোগের আদর্শ

 রামদাস শিবাজীকে শ্রেষ্ঠ কর্মযোগী বলিয়া সর্বদাই প্রশংসা করিতেন, তাঁহাকে সকলের সম্মুখে রাজার আদর্শ বলিয়া গরিতেন। রামদাস কর্তৃক পদে রচিত শিবাজীর নামে এক পত্র মহারাষ্ট্র দেশে প্রচলিত আছে, তাহাতে গুরু রাজাকে সম্বোধন করিতেছেন-“হে নিশ্চয়ের মহামেরু! বহুলোকের সহায়, অটলপ্রতিজ্ঞ, ইন্দ্রিয়জয়ী, দানবীর, অতুল গুণসম্পন্ন, নরপতি, অশ্বপতি, গজপতি, সমুদ্র ও ক্ষিতির অধীশ্বর, সদা প্রবল বিজয়ী, বিখ্যাত ধার্মিক বীর! •••পৃথিবী তোলপাড় হইয়াছে; ধর্ম্ম লোপ পাইয়াছে। গো-ব্রাহ্মণ, দেব ধর্ম রক্ষা করিবার জন্য নারায়ণ