পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
শিবাজী

শিবাজীকে আজ্ঞা দিয়া এই মুদ্‌হোলের ঘোরপড়ে বংশ প্রায় উচ্ছেদ করান। কিন্তু বিশেষ বিশ্বাসযোগ্য ফারসী-ইতিহাস “বুসাতীন্-ই সলাতীন্” হইতে আমরা জানিতে পারি যে গল্পটি সত্য নহে; শাহজীকে কয়েদ করিবার প্রণালী এইরূপ—“শাহজীর অবাধ্যতায় নবাব মুস্তাফা খাঁ তাঁহাকে গেরেফ্‌তার করা স্থির করিয়া, একদিন বাজীরাও ঘোরপড়ে ও যশোবন্ত রাও (আসদ্‌খানী)-কে নিজ নিজ সৈন্য সজ্জিত করিয়া অতি প্রত্যুষে শাহজীর শিবিরের দিকে পাঠাইলেন। শাহজী সারা রাত্রি নাচগান উপভোগ করিয়া ভোরে ঘুমাইয়া পড়িয়াছিলেন। এই দুই রাও-এর আগমন ও উদ্দেশ্য জানিতে পারিয়া হতভম্ব হইয়া ঘোড়ায় চড়িয়া শিবির হইতে একাকী পলাইতে লাগিলেন। বাজী রাও পিছু পিছু ঘোড়া ছুটাইয়া তাঁহাকে বন্দী করিয়া নবাবের সম্মুখে হাজির করিলেন। •••আদিল শাহ সংবাদ পাইয়া বন্দীকে রাজধানীতে আনিবার জন্য আফজল খাঁকে, এবং তাঁহার সম্পত্তি বুঝিয়া লইবার জন্য একজন খোজাকে জিঞ্জিতে পাঠাইলেন।” বিজাপুরে শাহজীকে আনিয়া কিছুদিন সেনাপতি আহমদ খাঁর বাড়ীতে কারাবদ্ধ রাখা হইল।

শাহজীর কারামুক্তি

 শিবাজী মহা বিপদে পড়িলেন; পিতাকে বাঁচাইতে হইলে তাঁহাকে বিজাপুর সুলতানের বাধ্যতা স্বীকার করিতে হইবে, আর এই বশ্যতার ফলে নুতন জয়-করা সমস্ত রাজ্য ফিরাইয়া দিতে হইবে—এত পরিশ্রম সব পণ্ড হইবে। সুতরাং দুইদিক রক্ষা করিবার জন্য তিনি রাজনীতির কূট চাল চালিলেন। প্রবল পরাক্রমশালী মুঘল-সম্রাট বিজাপুরের শত্রু, বিজাপুররাজ তাঁহার আজ্ঞা অমান্য করিতে সাহস করেন না। অতএব শিবাজী নিকটবর্ত্তী মুঘল-শাসনাধীন দাক্ষিণাত্য-প্রদেশের শাসনকর্ত্তা যুবরাজ মুরাদ বখ্‌শকে দরখাস্ত