পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মুঘল ও বিজাপুরের সহিত প্রথম যুদ্ধ
৩৩

তাহার লাভের সম্ভাবনা বেশী। এই ফন্দী গোপন রাখিয়া, পরামর্শ করিবার ভাণ করিয়া সোনাজীকে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি নিজের নিকট ফিরাইয়া আনিলেন। আর তাহার কিছুদিন পরেই মুঘল-অধিকৃত দাক্ষিণাত্যের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণ (অর্থাৎ মহারাষ্ট্রের অংশ) হঠাৎ আক্রমণ করিলেন। সেখানে দিল্লীশ্বরের সৈন্যও কম ছিল, এবং সেনাপতিগণও অলস, অসতর্ক। মিনাজী ভোঁশলে ও কাশী-নামক দুইজন মারাঠা সর্দ্দার ভীমা নদী পার হইয়া মুঘলদের চামারগুণ্ডা ও রায়সীন্ পরগণায় গ্রাম লুটিয়া, আহমদনগর শহরের আশপাশে পর্য্যন্ত আতঙ্কের সৃষ্টি করিল। আর, শিবাজী স্বয়ং ৩০এ এপ্রিল অন্ধকার রাত্রে দড়ির সিঁড়ি বাহিয়া উত্তর-পুণা জেলায় জুন্নর নগরের প্রাচীর ডিঙ্গাইয়া ভিতরে প্রবেশ করিয়া রক্ষীদের বধ করিলেন। এখান হইতে তিন লক্ষ হোণ (বারো লক্ষ টাকা), দুইশত ঘোড়া এবং অনেক মূল্যবান গহনা ও কাপড় লুটিয়া লইয়া শিবাজী সরিয়া পড়িলেন।

আওরংজীবের সহিত সন্ধি

 এই সংবাদ পাইয়া আওরংজীব ঐ অঞ্চলে অনেক সৈন্য পাঠাইলেন এবং স্থানীয় কর্ম্মচারীদের খুব শাসাইয়া দিলেন। আহমদনগরের দুর্গাধ্যক্ষ মুল্‌তফ খাঁ বাহিরে আসিয়া কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধের পর চামারা থানা হইতে মিনাজীকে তাড়াইয়া দিলেন। এদিকে, রাও কর্ণ ও শায়েস্তা খাঁ আসিয়া পড়ায় শিবাজী জুন্নর পরগণায় আর বেশীদিন থাকা নিরাপদ মনে করিলেন না। তিনি সরিয়া পড়িয়া আহমদনগর জেলায় ঢুকিলেন (মে মাসের শেষে)। কিন্তু এখানে আওরংজীব কর্ত্তৃক প্রেরিত সৈন্যদল লইয়া নসিরি খঁ দ্রুত কুচ করিয়া আসিয়া শিবাজীকে হঠাৎ আক্রমণ করিয়া প্রায় ঘিরিয়া ফেলিলেন (৪ঠা জুন)। মারাঠারা অনেকে মারা গেল, বাকী সকলে পলাইয়া প্রাণ বাঁচাইল।