পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
শিবাজী

মা বলিয়া ডাকিয়া আশ্বস্ত করিয়া তাহাকে বস্ত্র অলঙ্কার-সমেত বিজাপুরে তাহার শ্বশুরের নিকট সসম্মানে পাঠাইয়া দিলেন। সেই যুগে ইহা এক নূতন ঘটনা,—শুনিয়া সকলে আশ্চর্য্য হইল।

 ইহার পর শিবাজী কল্যাণ ও ভিবণ্ডীর উত্তরে মাহুলী-দুর্গ দখল করিলেন (৮ জানুয়ারি, ১৬৫৮)। এইরূপে উত্তর-কোঁকন দখল করিয়া ক্রমে দক্ষিণ দিকে কোলাবা জেলার কিয়দংশ অধিকারে আনিলেন এবং তথায় অনেক দুর্গ নির্ম্মাণ করাইলেন। কল্যাণের উত্তরে পোর্তুগীজদের দমন প্রদেশের কয়েকটি গ্রাম লুঠ করিয়া শিবাজী আসিরি দুর্গে স্থায়িভাবে আড্ডা গাড়িলেন। আর, কল্যাণের নীচে সমুদ্রের বাড়ীতে জাহাজ নির্ম্মাণ করিয়া মারাঠী নৌসেনার সূত্রপাত করিলেন।

শিবাজীর দমনে আফজল খাঁর অভিযান

 ১৬৫৮ সালের প্রথমভাগে আওরংজীব দাক্ষিণাত্য হইতে চলিয়া গেলেন; তখন বিজাপুর-রাজ্য শান্তি ও নুতন বল পাইল। মন্ত্রী খাওয়াস্ খাঁ বেশ বিচক্ষণ লোক, আর রাজমাতা বড়ী সাহিবা অত্যন্ত তেজ ও দক্ষতার সহিত রাজকার্য্য চালাইতে লাগিলেন। চারিদিকে অবাধ্য সামন্তদিগকে দমন করিবার চেষ্টা চলিতে লাগিল। শাহজীকে হকুম করা হইল যে, তাঁহার বিদ্রোহী পুত্রকে বশে আনুন। তিনি উত্তর দিলেন-“শিবা আমার ত্যাজ্য পুত্র। আপনারা তাহাকে সাজা দিতে পারেন, আমার জন্য সঙ্কোচ করিবেন না।”

 তখন শিবাজীর বিরুদ্ধে সৈন্য পাঠান সাব্যস্ত হইল। কিন্তু ভয়ে কোনো ওম্‌রাহ এই সমর-অভিযানের নেতা হইতে সম্মত হইলেন না। সুলতান তখন দরবারের মধ্যে একটি পানের বিড়া রাখিয়া বলিলেন, “যিনি এই যুদ্ধের নেতা হইতে প্রস্তুত, কেবল তিনিই এই