পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মুঘল ও বিজাপুরের সহিত প্রথম যুদ্ধ
৩৭

বিড়া তুলিয়া লইবেন এবং তাঁহাকে বীরশ্রেষ্ঠ বলিয়া গণ্য করা হইবে।”

 আবদুল্লা ভটারি (পাচক-বংশীয়), উপাধি আফজল খাঁ, বিজাপুর রাজ্যের প্রথম শ্রেণীর ওম্‌রা; মহীশূর-জয়ে, এবং মুঘলদের সহিত গত যুদ্ধে তিনি অনেকবার বীরত্ব ও প্রভুভক্তি দেখাইয়া সুনাম অর্জ্জন করিয়াছেন। তিনিই পানের বিড়াটি খপ্ করিয়া উঠাইয়া লইলেন, এবং সগর্ব্বে বলিলেন যে, ঘোড়র উপর বসিয়া থাকিয়াই শিবাজীকে পরাস্ত করিয়া বাঁধিয়া লইয়া আসিবেন।

 কিন্তু গত যুদ্ধের ফলে রাজসরকারের অর্থ ও লোকবল বড়ই কমিয়া গিয়াছে। কাজেই আফজলের সঙ্গে দশ হাজার অশ্বারোহীর বেশী সৈন্য পাঠান সম্ভব হইল না। এদিকে শিবাজীর অশ্বারোহী-সৈন্যই ত দশ হাজারের বেশী, তাহার উপর লোকে বলিত, জাবলীজয়ের ফলে তাঁহার অধীনে ষাট হাজার মাব্‌লে পদাতিক জুটিয়াছে। এ ছাড়া একদল সাহসী, রণদক্ষ পাঠান বিজাপুরের চাকরি হারাইয়া তাঁহার বেতনভোগী হইয়াছিল। সুতরাং বিজাপুরের রাণী-মা আফজলকে বলিয়া দিলেন,—“বন্ধুত্বের ভাণ করিয়া শিবাজীকে ভুলাইয়া বন্দী করিতে হইবে।” (তৎসাময়িক ইংরাজ-বণিকের চিঠিতে একথা স্পষ্ট লেখা আছে)।

আফজল খাঁর কার্য্যকলাপ

 আফজল খাঁ বিজাপুর হইতে প্রথমে সোজা উত্তর দিকে অগ্রসর হইয়া মহারাষ্ট্রের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ তীর্থ তুলজাপুরে পৌঁছিয়া সেখানকার ভবানী-মূর্ত্তি ভাঙ্গিয়া জাঁতায় পিষিয়া গুঁড়া করিয়া ফেলিলেন।[১] তাহার পর পশ্চিম

  1. মারাঠী গাথায় আছে, তিনি তুলজাপুরের পর মানিকেশ্বর, পংঢারপুর, এবং মহাদেব পর্ব্বতেও দেবদ্বিজের প্রতি অত্যাচার অবমাননা করেন। শ্রীযুক্ত বিনায়ক লক্ষ্মণ ভাবে বলেন, এ কথা সত্য নহে।