পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
শিবাজী

দিকে ফিরিয়া তিনি সাতারা শহরের ২০ মাইল উত্তরে বাই নামক নগয়ে পৌঁছিলেন (এপ্রিল ১৬৫৯)। এই নগরটি তাঁহার জাগীরে সদর ছিল। এখানে অনেক মাস থাকিয়া, কিরূপে শিবাজীকে পাহাড় হইতে খোলা জায়গায় আনা যায় অথবা স্থানীয় মারাঠা-জমিদারদের সাহায্যে বন্দী করা যায়, তাহার ফন্দী আঁটিতে লাগিলেন। বিজাপুর-সরকার অধীনস্থ সমস্ত মাব্‌লে দেশমুখদিগকে হুকুম পাঠাইয়াছিলেন, যেন তাঁহারা সৈন্য দিয়া আফজলের সহায়তা করেন। ইহার কিছু ফলও হইয়াছিল। রোহিড়খোরের দেশমুখী লইয়া খণ্ডোজী খোপ্‌ড়ে ও কান্‌হোজী জেধের মধ্যে ঝগড়া চলিতেছিল। কান্‌হোজী শিবাজীর পক্ষে ছিল। খণ্ডোজী আসিয়া আফজল খাঁর সহিত যোগ দিল এবং লিখিয়া অঙ্গীকার করিল যে, ঐ গ্রামের দেশমুখী তাহাকে দিলে সে শিবাজীকে ধরিয়া আনিয়া দিবে। খোপ্‌ড়েকে নিজ অনুচরসহ আফজলের সেনার অগ্রভাগের নেতা করা হইল।

 বর্ষার শেষে অক্টোবর মাসে সৈন্যচালনা করিবার উপযুক্ত সময় আবার আসিবে। ইতিমধ্যে শিবাজী প্রতাপগড় দুর্গে পৌঁছিয়াছেন। এই দুর্গ বাই হইতে মাত্র ২০ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত। আফজল খাঁ নিজ দেওয়ান কৃষ্ণাজী ভাস্করকে দিয়া শিবাজীকে বলিয়া পাঠাইলেন,—“তোমার পিতা আমার বহুকালের বন্ধু, সুতরাং তুমি আমার নিকট অপরিচিত পর নহ। আসিয়া আমার সঙ্গে দেখা কর, আমি বিজাপুরের সুলতানকে বলিয়া রাজী করাইর যাহাতে তোমার দুর্গগুলি ও কোঁকন প্রদেশ তোমারই আধিকারে থাকে। আমি দরবার হইতে তোমাকে আরও মান এবং সৈন্যের সরঞ্জাম দেওয়াইব। যদি তুমি স্বয়ং দররারে হাজির থাকিতে চাও, ভালই, উচ্চ সম্মান পাইবে। আর যদি তথায় উপস্থিত না হইয়া নিজ জাগীরে বাস করিতে চাও, তাহারও অনুমতি দিবার ব্যবস্থা করিব।”