পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
শিবাজী

আফজলকে আক্রমণ কর,—তোমারই জয় হইবে।”

 আর সংশয় রহিল না। প্রাতঃকালে আবার মন্ত্রণ-সভা বসিল। শিবাজীর বীর-বাণী এবং দেবীর আশীর্ব্বাদের কথা শুনিয়া প্রধানগণ সকলেই উৎসাহে মাতিয়া যুদ্ধে মত দিল। মাতা জীজা বাঈও শিবাজীকে আশীর্ব্বাদ করিয়া, তাঁহারই জয় হইবে এই ভবিষ্যদ্বাণী করিলেন।

 মুদ্ধে হঠাৎ তাঁহার মৃত্যু হইলে কিরূপে রাজ্য চালাইতে হইবে, সে বিষয়ে শিবাজী তখন নিজ কর্ম্মচারীদিগকে বিস্তারিত উপদেশ দিলেন। অত্যন্ত দুরদর্শিতা ও দক্ষতার সহিত আফজলকে আক্রমণ করিবার বন্দোবস্ত স্থির করা হইল। পেশোয়া ও সেনাপতি নেতাজী পালকরের অধীনে দুইটি বড় সৈন্যদল আনাইয়া তাহাদের প্রতাপগড়ের কাছে বনের মধ্যে লুকাইয়া থাকিতে আদেশ দেওয়া হইল।

আফজলের সহিত সন্ধি ও সাক্ষাতের আলোচনা

 এমন সময় আফজলের দূত কৃষ্ণাজী ভাস্কর আসিয়া শিবাজীকে খাঁর সহিত দেখা করিতে আহ্বান করিলেন। শিবাজী এই ব্রাহ্মণকে খুব খাতির-যত্ন করিলেন; রাত্রে তাঁহার নির্জ্জন কক্ষে ঢুকিয়া জানাইলেন, “আপনি হিন্দু ও পুরোহিত-জাতি। আমিও হিন্দু। সত্য করিয়া বলুন, আফজল খাঁর অভিসন্ধি কি?” পীড়াপীড়িতে বাধ্য হইয়া কৃষ্ণাজী উত্তর দিলেন যে, খাঁর অভিপ্রায় সাধু নহে।

 পরদিন শিবাজী নিজ পক্ষের দূত পন্তাজী গোপীনাথকে কৃষ্ণাজী ভাস্করের সহিত আফজলের শিবিরে পাঠাইলেন। খাঁ পস্তাজীর নিকট শপথ করিলেন যে, দেখা করিবার সময় তিনি শিবাজীর কোনই অনিষ্ট করিবেন না। আর, শিবাজীর তরফ হইতে পন্তাজী অঙ্গীকার করিলেন যে, আফজলের প্রতি সে সময় কোনরূপ বিশ্বাসঘাতকতা করা হইবে না। কিন্তু শিবাজীর দূত প্রচুর ঘুষ দিয়া সেখানকার বিজাপুরী-সর্দ্দারদের নিকট