পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
শিবাজী

গোপনে নামিলেন, পবনগড়ের সম্মুখস্থ বিজাপুরী শিবির আক্রমণ করিলেন, এবং সেই গোলমালের সুযোগে বিশালগড় দুর্গের দিকে পলাইবার ব্যবস্থা করিলেন।

পনহালা হইতে শিবাজীর পলায়ন

 কিন্তু বিশালগড় ২৭ মাইল দূরে, পথও অতি দুর্গম, উঁচুনীচু, পাথর-ছড়ান এবং সঙ্কীর্ণ। পরদিন প্রভাত-কিরণে দেখা গেল যে তথায় পৌঁছিতে আরও আট মাইল পথ বাকী আছে। এদিকে রাতেই শিবাজীর পলায়নের সংবাদ এবং তাঁহার পথের ঠিক সন্ধান পাইয়া ফজল খাঁ মাহতাব্ জ্বালাইয়া তাঁহার পিছু পিছু আসিয়াছেন। এখন দিনের আলোতে অসংখ্য শক্রসেনা মারাঠাদের পিষিরা মারিবে।

 এই মহাবিপদে বাজীপ্রভু নামক কায়স্থ-জাতীয় মাব্‌লে জমিদার নিজ প্রাণ বিসর্জ্জন দিয়া শিবাজীকে রক্ষা করিলেন। গজপুরের নিকট পথটি অতি সঙ্কীর্ণ, দুদিকেই উঁচু পাহাড় উঠিয়াছে। বাজীপ্রভু বলিলেন, “মহারাজ। আমি অর্দ্ধেক সৈন্য লইয়া এই স্থানটিতে মুখ ফিরিয়া দাঁড়াইয়া শত্রুসেনাকে দাবাইয়া রাখি। আপনি সেই সুযোেগে অবশিষ্ট রক্ষী লইয়া বিশালগঞ্জে দ্রুত প্রস্থান করুন। তথায় নিরাপদে পৌঁছিলে তোপের আওয়াজ করিয়া আমাকে সে সুসংবাদ দিবেন।”

 গজপুরের গিরিসঙ্কট মারাঠা-ইতিহাসের থার্মোপলি। সকাল হইতে পাঁচ ঘণ্টা পর্য্যন্ত বারে বারে প্রবল বিজাপুরী সৈন্যদল বন্যার মত আসিয়া সেই সঙ্কীর্ণ পিরিপথে প্রবেশ করিবার চেষ্টা করিতেছে, আর মুষ্টিমেয় মারাঠারা প্রাণপণে লড়িয়া তাঁহাদের হটাইয়া দিতেছে। সাত শত মারাঠা-সৈন্য সেখানে প্রাণ দিল, বাজীপ্রভুও আহত হইয়া রণক্ষেত্রে পড়িয়া গেলেন, তবু যুদ্ধের বিরাম নাই। দ্বিপ্রহর বেলায় পশ্চাতে আট মাইল দূর হইতে তোপধ্বনি শোনা গেল। শিবাজী বিশালগড়ে