পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
শিবাজী

মারাঠাদের ক্রমাগত তাড়াইয়া, এবং নিজের পশ্চাতের পথ নিরাপদ রাখিবার জন্য স্থানে স্থানে থানা বসাইয়া, অবশেষে পুণা শহরে আসিয়া পৌঁছিলেন (৯ই মে)। পথে তাঁহার কোন সৈন্য ক্ষয় হয় নাই বলিলেই চলে; মারাঠারা ভয়ে পিছাইয়া গেল, আর যদি-বা যুদ্ধ করিল এমন সুনিপুণভাবে চালিত ও দলবদ্ধ সৈন্যদলের সামনে দাঁড়াইতে পারিল না।

 পুণার ১৮ মাইল উত্তরে চাকন-দুর্গ। ইহা হস্তগত করিতে পারিলে মুঘলরাজ্য হইতে দক্ষিণমুখী পথ দিয়া অতি সহজে পুণায় রসদ আনা সম্ভব হইবে। শায়েস্তা খাঁ ২১এ জুন চাকনের বাহিরে পৌঁছিয়া দুর্গ অবরোধ শুরু করিলেন। দুর্গস্বামী ফিরঙ্গজী নরসালা প্রাণপণে লড়িলেন। কিন্তু মুঘলেরা আজ অজেয়। জলকাদা অগ্রাহ্য করিয়া তাহারা দুর্গের চারিদিক খুঁডিয়া মুর্চা বাঁধিতে লাগিল, মাটির নীচ দিয়া দুর্গের দেওয়ালের তলা পর্য্যন্ত একটি সুড়ঙ্গ করিয়া তাহাতে বারুদ ভরিয়া আগুন দিল (১৪ই আগষ্ট)। সশব্দে চাকন-দুর্গের উত্তর-পূর্ব্ব কোণের বুরুজ ফাটিয়া উড়িয়া গেল। আর সেই সুযোগে মুঘলেরা দুর্গপ্রাকার আক্রমণ করিয়া দুইদিন ধরিয়া মারামারি কাটাকাটির পর সমস্ত চাকন অধিকার করিল (১৫ই আগষ্ট)। শায়েস্তা খাঁ নিজে বীর, কাজেই বীরের আদর করিতে জানিতেন। তিনি ফিরঙ্গজীর গুণে মুগ্ধ হইয়া তাঁহাকে বাদশাহী সৈন্যদলে উচ্চপদ দিতে চাহিলেন, কিন্তু প্রভুভক্ত মারাঠা নিমকহারাম হইতে অস্বীকার করিলেন। তখন তাঁহাকে সসম্মানে সৈন্যসহ শিবাজীর নিকট ফিরিয়া যাইতে দেওয়া হইল।

দক্ষিণ-কোঁকনে শিবাজীর রাজ্য বিস্তার

 প্রায় দু’মাস ধরিয়া অবিরাম পরিশ্রমের পর চাকন অধিকার করিতে মুঘলদের ২৬৮ জন সৈন্য হত ও ৬০০ জন আহত হয়। সুতরাং ইহার