পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাঁচ বৎসর ধরিয়া যুদ্ধ, ১৬৬০-১৬৬৪
৫৫

রাত্রে শায়েস্তা খাঁর উপর আক্রমণ

 কিন্তু ইহার পরেই শিবাজী এমন একটি কাণ্ড করিলেন যাহাতে মুঘল-রাজদরবারে হাহাকার উঠিল এবং তাঁহার যাদুবিদ্যার খ্যাতি ও অমানুষিক ক্ষমতার আতঙ্ক সমগ্র ভারতে ছড়াইয়া পড়িল। তিনি রাত্রে শায়েস্তা খাঁর অগণিত সৈন্য-বেষ্টিত তাঁবুর মধ্যে ঢুকিয়া খুন-জখম করিয়া নিরাপদে ফিরিয়া আসিলেন (৫ই এপ্রিল, ১৬৬৩)।

 চাকন-দুর্গ জয় করিবার পর শায়েস্তা খাঁ পুণায় ফিরিয়া আসিলেন। এখানে তাঁহার আবাস হইল শিবাজীর বাল্যকালের বাড়ী “লালমহল”। তাহার চারিদিকে তাঁবু খাটাইয়া এবং কানাৎ, অর্থাৎ পর্দ্দার বেড়া দিয়া, পরিবারবর্গ ও চাকর-বাকরের থাকিবার স্থান করা হইল। রক্ষিগণের ঘর তাহার নিকটেই। সৈন্য-সামন্তেরা পুণা গ্রামের নানা অংশে আশ্রয় লইল। কিছু দূরে দক্ষিণে সিংহগড়ে যাইবার পথের ধারে শায়েস্তা খাঁর সর্বোচ্চ কর্ম্মচারী মহারাজা যশোবন্ত সিংহ দশ হাজার সৈন্য লইয়া আড্ডা গাড়িলেন।

 এমন সুরক্ষিত ও সুসজ্জিত শত্রু-ব্যূহ ভেদ করিতে হইলে অত্যন্ত সাহস বুদ্ধি ও ক্ষিপ্রতার প্রয়োজন। শিবাজীর যে পূর্ণমাত্রায় এই-সকল গুণ ছিল, তাহা তাঁহার পাকা বন্দোবস্ত হইতে বেশ বুঝা যায়। এক সহস্র সাহসী রণদক্ষ সেনা নিজের সঙ্গে লইলেন, আর পেশোয়া ও সেনাপতির অধীনে এক এক হাজার করিয়া মাব্‌লে পদাতিক অশ্বারোহীর দুইটি দলকে মুঘল-শিবিরের দক্ষিণে ও বামে আধ ক্রোশ দূরে লুকাইয়া রাখিলেন।

 এরূপই বন্দোবস্ত করিয়া শিবাজী সিংহগড় হইতে বাহির হইয়া সন্ধ্যার সময় পুণার নিকট পৌঁছিলেন। বাহিরে নিজ দলের ছয় শত সৈন্য রাখিয়া, পেশোয়া মোরো পন্ত ও সেনাপতি নেতাজীকে অপর দুইপাশে