পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
শিবাজী
৭০

গিয়াছেন। তাহার পর, উত্তর-ভারত হইতে প্রবল সৈন্যদল আসিলে বিজাপুর ও গোলকুণ্ডার সুলতানদ্বয় মুঘলের ভয়ে শিবাজীর সঙ্গে যোগ দিতে পারেন, সুতরাং জয়সিংহকে সেদিকেও দৃষ্টি রাখিতে হইবে। তিনি সত্য কথাই বাদশাহকে লিখিলেন, “আমি দিনরাতের মধ্যে এক মুহুর্ত্তের জন্যও বিশ্রাম ভোগ করি না, অথবা যে-কাজ হাতে লইয়াছি তাহার জন্য না ভাবিয়া থাকি না।”

মারাঠা-যুদ্ধের জন্য জয়সিংহের বন্দোবস্ত ও ফন্দী

 কিন্তু বাধা-বিপত্তিই প্রকৃত মনুষ্যত্বের পরীক্ষা করে। জয়সিংহ অতিশয় চাতুরী ও দক্ষতার সহিত ভাবী যুদ্ধের সব বন্দোবস্ত করিলেন। প্রথমতঃ তিনি নিজ পক্ষে যথাসম্ভব লোক আনিতে এবং শিবাজীর শত্রুদিগকে উত্তেজিত করিতে লাগিলেন। পুণায় পৌঁছিবার আগেই জানুয়ারি মাসে তিনি মুঘল-রাজ্যের বাসিন্দা দুইজন পোর্তুগীজ কাপ্তেন ফ্রান্সিস্কো এবং ডিওগো ডি মেলো’কে গোয়ার পোর্তুগাল-রাজপ্রতিনিধির নিকট পাঠাইয়া শিবাজীর নৌবল আক্রমণ করিবার জন্য সাহায্য চাহিলেন। জঞ্জিয়ার হাব্‌শী সর্দ্দার সিদ্দিকেও সেই মর্ম্মে পত্র লেখা হইল। বিদনুর, বাসবপটন, মহীশূর প্রভৃতি প্রদেশে হিন্দু রাজাদে নিকট জয়সিংহের ব্রাহ্মণ-দূতগণ গিয়া অনুরোধ করিল যে, এই সুযোগে তাঁহারা পুরাতন শত্রু বিজাপুর-রাজ্যের দক্ষিণ সীমানা আক্রমণ করুন। কোঁকনের উত্তরে কোলী-দেশের ছোট ছোট সামন্তদিগকে মুঘলপক্ষে আনিবার জন্য জয়সিংহের তোপখানার ফিরিঙ্গী সেনানী নিকোলো মানুশীকে পাঠান হইল।

 দ্বিতীয়তঃ, যাহাদের সঙ্গে শিবাজীর কোন সময়ে শত্রুতা ছিল, সিংহ তাহাদের ডাকিয়া নিজ সৈন্যদলে স্থান দিলেন। মৃত আফজল খাঁর পুত্র এবং চন্দ্র রাও মোরের পুত্র বাজী চন্দ্ররাও পিতৃহত্যার