পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
শি বা জী

এবং আজ্ঞা দিলেন যে, সৈন্য-বিভাগের সমস্ত নিয়োগ, কর্ম্মচ্যুতি, উন্নতি অবনতি, রসদ ও তোপ, সন্ধি করা ও ঘুষ দেওয়া,—সকল কাজেই একমাত্র জয়সিংহের হুকুম চলিবে, আওরঙ্গাবাদের সুবাদার কুমার মুয়জ্জমের নিকট কোন বিষয়ে মঞ্জুরী লওয়া বা আপিল করার প্রয়োজন হইবে না।

পুবন্দর-দুর্গ অবরোধ

 দিল্লী হইতে বিদায় লইয়া, সৈন্যসহ দ্রুত কুচ করিয়া, পথের কোথাও অনাবশ্যক একদিনের জন্যও বিশ্রাম না করিয়া জয়সিংহ ৩রা মার্চ্চ পুণায় পৌছিলেন। প্রথমেই পুরন্দর আক্রমণ করা সাব্যস্ত করিলেন।

 পুণা শহরের চব্বিশ মাইল দক্ষিণে পুরন্দর-দুর্গ। ইহাকে দুর্গ না বলিয়া সুরক্ষিত মহান্ গিরিসমষ্টি বলিলেই ঠিক হয়। নিজ পুরন্দরের চুড়া সমভূমি হইতে দুই হাজার পাঁচশত ফীট উঁচু; ইহাই বালা-কেল্লা বা উপরের দুর্গ, চারিপাশ খাড়া পাথর কাটা। আর ইহার তিনশত ফীট নীচে পাহাড়ের গা বাহিয়া নীচের দুর্গ (মারাঠ ভাষায় মাচী বলা হয়)। এই মাচীতে সৈন্যদের থাকিবার ঘর ও কার্য্যালয়, কারণ এটি বেশ প্রশস্ত। পূর্ব্বদিকে মাচীর কোণ হইতে এক মাইল লম্বা একটি সরু পাহাড়, তাহার শেষভাগ দেওয়ালে ঘেরা রুদ্রমালা বা বজ্রগড় নামে অপর একটি দুর্গ। এই বজ্রগড় হইতে মাচীর উপর গোলা বর্ষণ করিয়া সহজেই সেখান হইতে শত্রুদের তাড়াইয়া দেওয়া যায়।

 পুণায় থাকিবার সময় আবশ্যক মত নানা স্থানে অল্প অল্প সৈন্য দিয়া থানা বসাইয়া জয়সিংহ নিজ পথঘাট রক্ষা করিলেন; তাহার পর ২৩ মার্চ্চ রওনা হইয়া ৩০এ তারিখে পুরন্দরের সামনে আসিয়া পৌঁছিলেন। পরদিন হইতে রীতিমত দুর্গ অবরোধ আরম্ভ হইল। বিভিন্ন বাদশাহী সেনাপতিরা নিজ দলবল সহিত পুরন্দরের নানা দিকে আড্‌ডা করিয়া