মুর্চা খুঁড়িয়া দুর্গের উপর তোপ দাগিবার চেষ্টা করিলেন। দিন-দশের মধ্যেই সৈন্যদের অক্লান্ত চেষ্টায় এবং জয়সিংহের নিয়ত তত্ত্বাবধান এবং উৎসাহদানের ফলে তিনটি খুব বড় কামান একটি উচ্চ পাহাড়ের উপর টানিয়া তোলা হইল এবং রুদ্রমালের বুরুজের উপর ভারি ভারি গোলাবর্ষণ শুরু হইল। তাহার ফলে বুরুজের সামনের দেওয়াল ভাঙ্গিয়া গিয়া একটি প্রবেশের পথ দেখা দিল।
রুদ্রমাল ও বুরুজ জয় হইল
১৩ই এপ্রিল দুপুর বেলা দিলির খাঁ হঠাৎ আক্রমণ করিয়া এই বুরুজটি দখল করিলেন; মারাঠারা হটিয়া গিয়া মধ্যের একটি দেওয়াল-ঘেরা স্থানে আশ্রয় হইল। পরদিন বৈকালে মুঘল ও রাজপুতদের বন্দুকের গুলিতে অতিষ্ঠ হইয়া মারাঠারা সমস্ত রুদ্রমাল ছাড়িয়া দিল। জয়সিংহ তাহাদের প্রাণদান করিলেন। এবং তাহাদের নেতাদের সম্মানসূচক পোষাক দিয়া বাড়ী ফিরিতে অনুমতি দিলেন।
তাহার পর (২৫ এপ্রিল) দায়ূদ খাঁর অধীনে ছয় হাজার সৈন্য দিয়া তাঁহাকে মহারাষ্ট্রের চারিদিকে গ্রাম লুটিতে পাঠাইলেন। আর কুতবুদ্দীন খাঁ এবং লোদী খাঁকেও নিজ নিজ থানা হইতে বাহির হইয়া নিকটের গ্রাম লুটিতে এবং গরুবাছুর কৃষক বন্দী করিতে আজ্ঞা দিলেন। ইহার ফলে শিবাজীর প্রজাদের সমূহ ক্ষতি ও তাঁহার দেশের স্থায়ী অনিষ্ট হইল।
সম্মুখে এবং চারি পাশে এইরূপ বিপদ দেখিয়া মারাঠারা পুরন্দর অবরোধকারীদের তাড়াইয়া দিবার নানা চেষ্টা করিল। মুঘল-প্রদেশের স্থানে স্থানে দ্রুতবেগে আক্রমণ করিল। কিন্তু জয়সিংহ পুরন্দর হইতে নড়িলেন না, দূরে আক্রান্ত স্থানগুলিকে রক্ষা করিবার জন্য কিছু কিছু অশ্বারোহী পাঠাইলেন মাত্র। মুঘলদের অনেক ক্ষতি হইল বটে,