পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
শি বা জী

 জয়সিংহ পুণায় পৌঁছিবার আগেই শিবাজী ক্রমাগত তাঁহার কাছে ব্রাহ্মণ-দূত ও চিঠি পাঠাইতেছিলেন, কিন্তু জয়সিংহ তাহার কোন উত্তর দেন নাই, কারণ তিনি জানিতেন যে, যতক্ষণ শিবাজীকে বাহুবলে জব্দ করা না যাইবে ততক্ষণ তিনি সত্যসত্যই বশ মানিবেন না। কিন্তু ২০এ মে শিবাজীর পণ্ডিত রাও (অর্থাৎ দানাধ্যক্ষ) রঘুনাথ বল্লাল আসিয়া গোপনে জয়সিংহকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনি কি পাইলে সন্ধি করিতে প্রস্তুত?” মুঘল-প্রতিনিধি উত্তর করিলেন,“শিরাজী স্বয়ং আসিয়া বিনা শর্ত্তে আত্মসমর্পণ করিবেন, তাহার পর তাঁহার প্রতি বাদশাহর অনুগ্রহ দেখান হইবে।”

শিবাজী-জয়সিংহের সাক্ষাৎ

 এই কথা শুনিয়া শিবাজী জিজ্ঞাসা করিয়া পাঠাইলেন যে,তাঁহার পুত্র শম্ভুজী আসিয়া বশ্যতা স্বীকার করিলে চলিবে কি? জয়সিংহ উত্তর দিলেন, “না, শিবাজীকে নিজে আসিতে হইবে।” অবশেষে শিবাজী চাহিলেন যে, তিনি সাক্ষাৎ করিতে আসিবার পর সন্ধি হউক বা না হউক, তাঁহাকে নিরাপদে ফিরিয়া যাইতে দেওয়া হইবে বলিয়া জয়সিংহ ধর্ম্ম-শপথ করুন। জয়সিংহ তাহাই করিলেন এবং বলিয়া পাঠাইলেন, শিবাজী যেন অতি গোপনে আসেন, কারণ বাদশাহ রাগিয়া আজ্ঞা দিয়াছেন যে, তাঁহার সহিত সন্ধির কোন কথাবার্ত্তা না বলিয়া নির্ম্মম যুদ্ধ চালাইতে হইবে।

 এই বন্দোবস্ত করিয়া ৯ই জুন রঘুনাথ পণ্ডিত নিজ প্রভুর নিকট ফিরিলেন। ১১ই তারিখে বেলা এক প্রহর হইয়াছে, জয়সিংহ নিজ শিবিরে দরবার করিতেছেন, এমন সময় রঘুনাথ আসিয়া সংবাদ দিলেন যে, শিবাজী শুধু ছয়জন ব্রাহ্মণ সঙ্গে লইয়া পালকী করিয়া অতি নিকটে পৌঁছিয়াছেন। জয়সিংহ তৎক্ষণাৎ তাঁহার মুন্সী উদয়রাজ এবং জ্ঞাতি