পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
শি বা জী

পুন্দরের সন্ধির শর্ত

 শিবাজী বিছানা আসবাবপত্র কিছুই সঙ্গে না লইয়া একেবারে খালি হাতে আসিয়াছিলেন। সেজন্য জয়সিংহ তাঁহাকে অতিথি করিয়া নিজ দরবার-তাম্বুতে বাসা দিলেন। দুপুর রাত্রি পর্য্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে সন্ধির শর্ত্ত লইয়া দর কষাকষি চলিতে লাগিল। জয়সিংহ প্রথমে কিছুই ছাড়িবেন না, অবশেষে অনেক তর্ক-বিতর্কের পর স্থির হইল যে, শিবাজীর তেইশটি দুর্গ এবং তদসংলগ্ন সমস্ত জমি (যাহার বার্ষিক খাজনা চারিলক্ষ হোণ অর্থাৎ বিশ লক্ষ টাকা) বাদশাহ পাইবেন, আর বারোটি দুর্গ (এবং তদসংলগ্ন এক লক্ষ হোণের জমি) শিবাজীর থাকিবে। কিন্তু শিবাজী বাদশাহর প্রজা বলিয়া নিজেকে মানিবেন এবং তাঁহার অধীনে কার্য্য করিবেন।

 তবে এক বিষয়ে শিবাজীকে অপমান হইতে রক্ষা করা হইল। তাঁহাকে নিজে মন্‌সবদার হইয়া সৈন্য লইয়া বাদশাহর বা দাক্ষিণাত্যের রাজপ্রতিনিধির দরবারে হাজির হইতে হইবে না, তাঁহার পুত্র পাঁচ হাজারী জাগীরের অনুযায়ী (প্রকৃতপক্ষে দুই হাজার) সৈন্য লইয়া উপস্থিত থাকিবেন। উদয়পুরের মহারাণাকেও এই অনুগ্রহ দেখান হইত। জয়সিংহ জানিতেন যে, বেশী কড়াকড়ি করিলে শিবাজী হতাশ হইয়া বিজাপুরের সঙ্গে যোগ দিবেন।

 পরস্পরের সন্ধিতে আর একটি গোপনীয় শর্ত্ত ছিল। কোঁকন অর্থাৎ পশ্চিমঘাট এবং সমুদ্রের মধ্যবর্ত্তী অতি লম্বা সরু কিন্তু ধনজনপূর্ণ প্রদেশ বিজাপুরের অধীন ছিল। শীঘ্রই বাদশাহ বিজাপুর-রাজ্য আক্রমণ করিবেন। তখন শিবাজী বিজাপুরের হাত হইতে তলভূমি (তল্-কোঁকন বা বিজাপুরী পাইন্-ঘাট)-র চারি সরু হোণ আয়ের জমি এবং অধিত্যকা (অর্থাৎ বিজাপুরী বালাঘাট -এর পাঁচলক্ষ হোণ আয়ের জমি