পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জয়সিংহ ও শিবাজী
৮১

 ইহার পর জয়সিংহ নিজ বিজয়ী সেনা লইয়া বিজাপুর-রাজ্য আক্রমণ করিবেন। কথা ছিল, শিবাজী নিজ পুত্রের মন্‌সবের দুই হাজার অশ্বারোহী এবং অতিরিক্ত সাত হাজার মাব্‌লে পদাতিক লইয়া স্বয়ং জয়সিংহের সহায়তা করিবেন। তজ্জন্য তাঁহাকে দুই লক্ষ টাকা অগ্রিম দেওয়া হইল। অবশেষে ২০ নবেম্বর ১৬৬৫ জয়সিংহ বিজাপুর অভিযানে রওনা হইলেন। শিবাজী এবং তাহার সেনাপতি নেতাজী পালকরের অধীনে নয় হাজার মারাঠা-সৈন্য মুঘলদলের মধ্যবিভাগের বাম পাশে স্থান পাইল।

 যাইতে যাইতে শিবাজীর ডাকে বিনাযুদ্ধে, বিজাপুরের অধীন কয়েকটি দুর্গ পাওয়া গেল (যথা—ফল্‌টন্, থাথ্‌বড়া, খাটাব এবং মঙ্গলভিড়ে)। এই শেষ স্থান হইতে বিজাপুর শহর বাহান্ন মাইল দক্ষিণে। ইহার অর্দ্ধেক পথ পার হইতেই বিজাপুরী সৈন্যদল মুঘলদের গতিরোধ করিয়া দাঁড়াইল। কয়েক বার অতি ভীষণ যুদ্ধ হইল। শিবাজী ও নেতাজী প্রাণপণে মুঘলপক্ষে লড়িলেন, আর শত্রুদের দলে শিবাজীর বৈমাত্রেয় ভ্রাতা ব্যঙ্কাজী বীরত্ব দেখাইলেন। একদিন শিবাজী ও জয়সিংহের পুত্র কীরত সিংহ এক হাতীতে চড়িয়া মুঘল-অগ্রবাহিনী সৈন্য লইয়া বিজাপুরীদল ভেদ করিলেন, আর একদিন নেতাজী অদম্য সাহসে মুঘল-সৈন্যের ফিরিবার সময় পশ্চাদ্ভাগ শত্রু-আক্রমণ হইতে রক্ষা করিলেন।

 এইরূপে অগ্রসর হইয়া ২৯এ ডিসেম্বর জয়সিংহ বিজাপুর-দুর্গের দশ মাইল উত্তরে পৌঁছিলেন। কিন্তু এখানে তাঁহার গতিরোধ হইল, এখান হইতে সাত দিন পরে তাঁহাকে বাধ্য হইয়া ফিরিতে হইল। বিজাপুর-রাজসভার কর্ম্মচারী ও ওমরাহদের মধ্যে ঝগড়ায় সুযোগে তিনি তাহাদের অনেককে ঘুষ দিয়া হাত করিয়াছিলেন, সুতরাং এই সময়