পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজী ও আওরংজীবের সাক্ষাৎ
৮৭

ক্ষতি হইবে না; সর্ব্বত্রই তাঁহার কর্ম্মচারিগণ তাঁহার নির্দ্দিষ্ট প্রণালী অনুসারে কাজ চালাইবে, অভ্যস্ত নিয়ম-মত রাজ্যরক্ষা করিবে,—কোনও বিষয়ে নূতন হুকুমের প্রতীক্ষায় প্রভুর মুখ চাহিয়া অসহায় অবস্থায় বসিয়া থাকিতে হইবে না। শিবাজীর মাতা জীজা বাঈ রাজপ্রতিনিধি হইয়া সকলের উপরে রহিলেন। তাঁহার সহকারী হইলেন তিনজন—মোরেশ্বর এ্যম্বক পিংলে পেশোয়া অর্থাৎ প্রধান মন্ত্রী, নিলো সোনদেব মজমুয়াদার অর্থাৎ হিসাব পরীক্ষক, এবং নেতাজী পালকর সেনাপতি। রাজ্যের সর্ব্বত্র ঘুরিয়া, প্রত্যেক দুর্গ পরীক্ষা করিয়া, সর্ব্বত্র রক্ষার সুবন্দোবস্ত করিয়া, কর্ম্মচারিগণকে দিবারাত্র সতর্ক ও কার্য্য তৎপর থাকিতে এবং তাহার নিয়মাবলী পূর্ণমাত্রায় পালন করিতে বার-বার বলিয়া দিয়া, শিবাজী ৫ই মার্চ ১৬৬৩ তারিখে মাতা ও পরিজনবর্গের নিকট বিদায় লইয়া রাজগড় হইতে রওনা হইলেন। সঙ্গে চলিল—পুত্র শম্ভুজী, কয়েকজন বিশ্বস্ত মন্ত্রী, এবং এক হাজার শরীর-রক্ষী সৈন্য। তাঁহার পথ-খরচের জন্য দাক্ষিণাত্যের রাজকোষ হইতে একলক্ষ টাকা অগ্রিম দেওয়া হইল। ইহার আগেই শিবাজীর দুত-স্বরূপ রঘুনাথ বল্লাল কোর্‌ডে এবং সোনাজী পন্ত দবীর্ বাদশাহর দরবারে যাত্রা করিয়াছিলেন।

 উত্তর-ভারতে যাইবার পথে শিবাজী প্রথমে আওরঙ্গাবাদ শহরে পৌছিলেন। তাঁহার খ্যাতি এবং সৈন্যদের জাঁকজমকপূর্ণ সাজসজ্জার কথা শুনিয়া নগরবাসীরা অগ্রসর হইয়া তাঁহাদের দর্শনলাভের প্রতীক্ষা করিতেছিল। কিন্তু স্থানীয় মুঘল শাসনকর্ত্তা সফ্‌শিকন্ খাঁ ভাবিলেন ষে, শিবাজী সামান্য জমিদার এবং বুনো মারাঠামাত্র; তিনি অতিথিকে অভ্যর্থনা করিবার জন্য স্বয়ং অগ্রসর না হইয়া ভ্রাতুষ্পুত্রকে পাঠাইয়া দিয়া জানাইলেন যে শিবাজী যেন তাঁহার কাছারীতে আসিয়া তাঁহার সহিত