পাতা:শিশু ভোলানাথ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৯১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
গ্রন্থপরিচয়

‘শিশু ভোলানাথ’ গ্রন্থের অধিকাংশ কবিতা ‘মৌচাক’ ‘সন্দেশ’ ‘প্রবাসী’ ‘বঙ্গবাণী’ ‘রংমশাল’ ‘শ্রেয়সী' প্রভৃতি সাময়িক পত্রে প্রকাশিত হইয়াছিল। ‘সময়হারা’ কবিতাটি ১৩৩০ বৈশাখের ‘সন্দেশ’ পত্রিকা হইতে আষাঢ় ১৩৫০ সংস্করণে নূতন সংকলিত হইয়াছে।

 ‘শিশু ভোলানাথ’ সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথ ‘যাত্রী’র ‘পশ্চিম যাত্রীর ডায়ারি’ অংশে লিখিয়াছেন-

 একজন অপরিচিত যুবকের সঙ্গে একদিন এক মোটরে নিমন্ত্রণসভায় যাচ্ছিলুম। তিনি আমাকে কথাপ্রসঙ্গে খবর দিলেন যে, আজকাল পদ্য আকারে যে-সব রচনা করছি সেগুলি লোকে তেমন পছন্দ করছে না। তাদের সুযোগ্য প্রতিনিধিস্বরূপে তিনি উল্লেখ করলেন তাঁর কোনো কোনো আত্মীয়ের কথা, সেই আত্মীয়েরা কবি; আর, যে-সব পদ্যরচনা লোকে পছন্দ করে না তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ করলেন আমার গানগুলো আর আমার ‘শিশু ভোলানাথ’-নামক আধুনিক কাব্যগ্রন্থ। তিনি বললেন, আমার বন্ধুরাও আশঙ্কা করছেন আমার কাব্য লেখবার শক্তি ক্রমেই ম্লান হয়ে আসছে।

 কালের ধর্মই এই। মর্ত্যলোকে বসন্তঋতু চিরকাল থাকে না। মানুষের ক্ষমতার ক্ষয় আছে, অবসান আছে। যদি কখনো কিছু দিয়ে থাকি, তবে মূল্য দেবার সময় তারই হিসাবটা স্মরণ করা ভাল। রাত্রিশেষে দীপের আলো নেববার সময় যখন সে তার শিখার পাখাতে বার-কতক শেষ ঝাপটা দিয়ে লীলা সাঙ্গ করে, তখন আশা দিয়ে নিরাশ করবার দাবিতে প্রদীপের নামে নালিশ করাটা বৈধ নয়। দাবিটাই যার বেহিসাবি, দাবি অপূরণ হবার হিসাবটাতেও তার ভূল থাকবেই।

৮৭