পাতা:শেষের কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১৫

ব্যাঘাত

 দুই সখী যোগমায়ার বাগানে বাইরের দরজা পার হয়ে চাকরদের কাউকে দেখতে পেলে না। গাড়িবারাণ্ডায় এসে চোখে পড়ল বাড়ির রোয়াকে একটি ছোটো টেবিল পেতে এক শিক্ষয়িত্রী ও ছাত্রীতে মিলে পড়া চলছে। বুঝতে বাকি রইল না, এরই মধ্যে বড়োটি লাবণ্য।

 কেটি টক্ টক্ করে উপরে উঠে ইংরেজিতে বললে, ‘দুঃখিত।’

 লাবণ্য চৌকি ছেড়ে উঠে বললে, ‘কাকে চান আপনারা?’

 কেটি এক মুহূর্তে লাবণ্যর আপাদমস্তকে দৃষ্টিটাকে প্রখর ঝাঁটার মতো দ্রুত বুলিয়ে নিয়ে বললে, ‘মিস্টার অমিট্রায়ে এখানে এসেছেন কি না খবর নিতে এলুম।’

 লাবণ্য হঠাৎ বুঝতেই পারলে না ‘অমিট্রায়ে’ কোন জাতের জীব। বললে, ‘তাঁকে তো আমরা চিনি নে।’

 অমনি দুই সখীতে একটা বিদ্যুচ্চকিত চোখ-ঠারাঠারি হয়ে গেল, মুখে পড়ল একটা আড়হাসির রেখা। কেটি ঝাঁজিয়ে উঠে মাথা নাড়া দিয়ে বললে, ‘আমরা তো জানি এ বাড়িতে তাঁর যাওয়া-আসা আছে oftener than is good for him।’

 ভাব দেখে লাবণ্য চমকে উঠল, বুঝলে এরা কে আর ও কী ভুলটাই করেছে। অপ্রস্তুত হয়ে বললে, ‘কর্তামাকে ডেকে দিই, তাঁর কাছে খবর পাবেন।’

১৫৩