পাতা:শেষ প্রশ্ন.djvu/৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিক দিয়াও লেশমাত্র ত্রুটি নাই। ইঁহাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পর্যন্ত শিখিয়াছে কোন্‌ বেগমের কোথায় আঁতুড়ঘর ছিল, কোন্‌ জাঠসর্দার কোথায় ভাত রাঁধিয়া খাইয়াছে,—সে কালির দাগ কত প্রাচীন,—কোন্‌ দস্যু কত হীরা-মাণিক্য লুণ্ঠন করিয়াছে এবং তাহার আনুমানিক মূল্য কত,—কিছুই আর কাহারও অবিদিত নাই। এই জ্ঞান ও পরম নিশ্চিন্ততার মাঝখানে হঠাৎ একদিন বাঙালী সমাজে চাঞ্চল্য দেখা দিল। প্রত্যহ মুসাফিরের দল যায় আসে, অ্যামেরিকান টুরিস্ট হইতে শ্রীবৃন্দাবন ফেরত বৈষ্ণবদের পর্যন্ত মাঝে মাঝে ভিড় হয়—কাহারও কোন ঔৎসুক্য নাই, দিনের কাজে দিন শেষ হয়, এমনি সময়ে একজন প্রৌঢ়বয়সী ভদ্র বাঙালী সাহেব তাঁহার শিক্ষিতা, সুরূপা ও পূর্ণ-যৌবনা কন্যাকে লইয়া স্বাস্থ্য উদ্ধারের অজুহাতে শহরের এক প্রান্তে মস্ত একটা বাড়ি ভাড়া করিয়া বসিলেন। সঙ্গে তাঁহার বেহারা, বাবুর্চি, দরোয়ান আসিল; ঝি, চাকর, পাচক-ব্রাহ্মণ আসিল; গাড়ি, ঘোড়া, মোটর, শোফার, সহিস, কোচয়ানে এতকালের এত বড় ফাঁকা বাড়ির সমস্ত অন্ধ্র রন্ধ্র যেন যাদুবিদ্যায় রাতারাতি ভরিয়া উঠিল। ভদ্রলোকের নাম আশুতোষ গুপ্ত, কন্যার নাম মনোরমা। অত্যন্ত সহজেই বুঝা গেল ইঁহারা বড়লোক। কিন্তু উপরে যে চাঞ্চল্যের উল্লেখ করিয়াছি, সে ইঁহাদের বিত্ত ও সম্পদের পরিমাণ কল্পনা করিয়া নয়, মনোরমার শিক্ষা ও রূপের খ্যাতি-বিস্তারেও তত নয়, যত হইল আশুবাবুর নিরভিমান সহজ ভদ্র আচরণে। তিনি মেয়েকে সঙ্গে করিয়া নিজে খোঁজ করিয়া সকলের সহিত সাক্ষাৎ করিলেন; বলিলেন, তিনি পীড়িত লোক, তাঁহাদের অতিথি, সুতরাং নিজ গুণে দয়া করিয়া যদি না তাঁহারা এই প্রবাসীদের দলে টানিয়া লয়েন ত এই নির্বাসনে বাস করা একপ্রকার অসম্ভব। মনোরমা বাড়ির ভিতরে গিয়া মেয়েদের সহিত পরিচয় করিয়া আসিল,