পাতা:শেষ লীলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শেষ লীলা
২৯

 আমি। যদি তুমি প্রকৃত কথা বলিতে চাহ, তাহা হইলে গোপনে আমাকে বলিবার কিছুমাত্র প্রয়োজন নাই। প্রকৃতপক্ষে যাহা তুমি অবগত আছ, বা নিজে তুমি যাহা করিয়াছ, তাহা সকলের সম্মুখে প্রকাশ কর। তোমার সমস্ত কথা শুনিলে তখন আমরা বুঝিতে পারিব যে, তোমার কথা কতদূর প্রকৃত। বুঝিব, এই হত্যা তোমার দ্বারা হইয়াছে কি না,মিথ্যা কথা বলিয়া তুমি হরিকে বাঁচাইবার চেষ্টা করিতেছ কি না।

 ত্রৈলোক্য। আমি মিথ্যা বলিয়া হরিকে বাঁচাইবার চেষ্টা করিতেছি না। চলুন, আমি যাহা জানি, তাহা সর্ব্বসমক্ষে বলিতেছি। আমার সকল কথা শুনিলে নিশ্চয়ই আপনারা আমার প্রাণের হরিকে ছাড়িয়া দিবেন।

 এই বলিয়া ত্রৈলোক্য পুনরায় আপনার স্থানে আসিয়া উপবেশন করিল, আমিও আপন স্থানে প্রত্যাবর্ত্তন করিলাম।

 সেই স্থানে উপবেশন করিয়া, ত্রৈলোক্য আমাকে লক্ষ্য করিয়া কহিল, “আপনি আমার অনেক বিষয় অবগত আছেন। সুতরাং মনোযোগ দিয়া শ্রবণ করিলে, আপনি আমার অবস্থা যতদূর বুঝিতে পারিবেন, ততদুর আর কেহই বুঝিয়া উঠিতে পারিবেন না!”

 এই বলিয়া ত্রৈলোক্য বলিতে আরম্ভ করিল,—“যে হত্যাপরাধে আপনি আমাকে বিচারার্থ প্রেরণ করিয়াছিলেন, আমি প্রকৃতুই সেই অপরাধে অপরাধী ছিলাম; কিন্তু ইংরাজের আইনের বলে ও বিচারকের বিচারের গুণে, আমি সে যাত্রা পরিত্রাণ পাই। বিচারে অব্যাহতি পাইয়া, যে স্থানে আমি পূর্ব্বে বাস করিতাম, সেই স্থানে গিয়া পুনরায় বাস করিতে আরম্ভ করি। আমার দুষ্কার্য্যের প্রধান সহায় সেই বোবা, তাহা বোধ হয়, আপনি জানেন; তাহার