পাতা:শেষ লীলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
দারোগার দপ্তর, ৭৮ম সংখ্যা।

 আমি। তাহার পর কি হইল?

 ত্রৈলােক্য। ধূতুরার গুড়া সংগ্রহ করিয়া রাখিলাম সত্য; কিন্তু রাজকুমারীকে উহা প্রয়ােগ করিবার সুযোগ কয়েকদিবসের মধ্যে করিয়া উঠিতে পারিলাম না। আমি পরে জনিয়াছিলাম যে, যেরূপ করিয়া তামাকু সাজিয়া খাইতে হয়, সেরূপ করিয়া সিদ্ধি সাজিয়া খাইলে অতিশয় নেসা হয়; সুতরাং কিছু সিদ্ধিও আমি সংগ্রহ করিয়া রাখিয়া দিয়াছিলাম। এই সমস্ত দ্রব্য সংগ্রহ করিয়া আমি চারি পাঁচদিবস রাখিলাম; কিন্তু কোনরূপ সুযােগ করিতে পারিলাম না।

 “একদিবস রাজকুমারী তাহার একটী পরিচিত স্ত্রীলোেকর সহিত সাক্ষাৎ করিতে গমন করিয়াছিল। আমিও তাহার সহিত গিয়াছিলাম। যখন আমরা উভয়ে সেই স্থান হইতে প্রত্যাগমন করি, সেই সময় কিছু সন্দেশ আমি খরিদ করিয়া আনিয়াছিলাম। সেই সন্দেশ যে আমি নিজে ভােজন করিব বলিয়া আনিয়াছিলাম, তাহা নহে, উহার দ্বারাই আমি রাজকুমারীর সর্ব্বনাশ সাধন করিব, এই অভিপ্রায়ই আমি উহা আনিয়াছিলাম।

 “আমি পূর্ব্বেই বলিয়াছি যে, আমি কতকটা ধূতুরার গুঁড়া সংগ্রহ করিয়া রাখিয়া দিয়াছিলাম। এখন আমি এবং প্রিয় উভয়ে মিলিয়া সেই সন্দেশের কতকগুলিতে সেই গুঁড়া মিশ্রিত করিয়া দিলাম, কতকগুলি সন্দেশ ভাল রহিল। তখন উহা আমরা পৃথক পাত্রে, আমার ঘরের ভিতরে যে একটা আলমারি আছে, তাহার মধ্যে চাবি-বদ্ধ করিয়া রাখিয়া দিলাম। আলমারির ভিতর উহা বদ্ধ করিয়া রাখিবার কারণ এই যে, পাছে হরি জানিতে পারিয়া সেই সন্দেশ খাইয়া ফেলে।