পাতা:শেষ লীলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শেষ লীলা
৩৭

 ত্রৈলােকের এই কথা শুনিয়া, সেই স্থানে যে সকল কর্ম্মচারী উপস্থিত ছিলেন, সকলেই একবারে বিস্মিত হইয়া পড়িলেন। বাড়ীর অপরপর স্ত্রীলোকগণ যাহারা ইতিপূর্ব্বে হরির বিপক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করিয়াছিল, তাহারা মস্তক অবনত করিয়া সেই স্থানে বসিয়া রহিল; এবং মধ্যে মধ্যে, এক একবার বক্রদৃষ্টি করিয়া ত্রৈলােক্যকে দেখিতে লাগিল।

 আমি কহিলাম, আপনার পুত্ত্রকে বাঁচাইতে কে না চেষ্টা করিয়া থাকে? তুমি তােমার পুত্ত্র হরিকে বাঁচাইবার নিমিত্ত যে এইরূপ মিথ্যা কথা কহিবে, তাহার আর আশ্চর্য্য কি? আমি যেরূপ প্রমাণ পাইতেছি, তাহাতে রাজকুমারী যে হরি কর্ত্তৃক হত হইয়াছে, তাহা আমরা একরূপ স্থিরই করিয়া লইয়াছি। কিন্তু তুমি এখন বলিতেছ, সেই হত্যা হরির দ্বারা হয় নাই, তােমার দ্বারাই হইয়াছে। কেবল তােমার কথার নির্ভর করিয়া, আমি কার্য্য করিতে পারি না। এই খুন যে তুমি করিয়াছ, তােমার নিজের কথা ব্যতীত তাহার আর প্রমাণ কি?—যে, সেই প্রমাণের উপর নির্ভর করিয়া, আমি হরিকে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারি?”

 ত্রৈলোক্য। এই খুন যে আমি করিয়াছি, তাহার যথেষ্ট প্রমাণ আছে। প্রথমতঃ এই কথা আমি সর্ব্বসমক্ষে মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করিতেছি। দ্বিতীয়তঃ, ওই প্রিয় ইহার সমস্ত অবগত আছে, উহাকে ঈশ্বরের দিব্য দিয়া জিজ্ঞাসা করুন; ও প্রকৃত কথা বলিলে, আপনাদিগের মনে আর কোনরূপ সন্দেহ থাকিবে না, আপনারা সমস্ত বিষয়ই জানিতে পারিবেন। আমার বিশ্বাস যে, প্রিয় এখন আমাকে বাঁচাইবার অভিপ্রায়ে আর মিথ্যা কথা কহিবে না। তৃতীয়তঃ, যে বিষমিশ্রিত সন্দেশের কিয়দংশ রাজকুমারীকে