পাতা:শেষ লীলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
দারােগার দপ্তর, ৭৮ম সংখ্যা।

সর্ব্ব-উপরের তক্তা। উপরের তক্তা খানি যেরূপ ভাবে কার্ণিসের সহিত আবদ্ধ থাকে, উহাও ঠিক সেইরূপ ভাবে সম্মুখ হইতে আবদ্ধ ছিল; কিন্তু আলমারির কার্ণিশের মধ্যে উপর্য্যুপরি দুই খানি তক্তার ভিতর দুই ইঞ্চি পরিমিত ব্যবধান ছিল। তাহার ভিতর দ্রব্যাদি রাখিবার বা উহা হইতে দ্রব্যাদি বাহির করিয়া লইবার নিমিত্ত আলমারির পশ্চাৎ একটী দরজা ছিল। এক খানি কাছে উহা এরূপ আড়ভাবে বসান যে, পশ্চাৎ হইতে দেখিলেও কেহ সহজে বুঝিতে পারিতেন না যে, উহার মধ্যে একটা দেরাজের মত স্থান আছে। সেই এড়ে কাষ্ঠখানি আলমারির যে পার্শ্বে শেষ হইয়াছে, সেই পার্শ্বে সেই কাষ্ঠের গায়ে একটু সামান্য ফাটা দাগ ছিল মাত্র। সেই দাগের ভিতর নখ বসাইয়া এক পার্শ্বে সরাইয়া দিলে সেই এড়ো কাষ্ঠ খানি সরিয়া যাইত; সুতরাং সেই দেরাজের মুখ ফাঁক হইয়া পড়িত। তখন তাহার মধ্যে ইচ্ছানুযায়ী দ্রব্য রাখিয়া দিয়া বা তাহা হইতে কোন দ্রব্য বাহির করিয়া লইয়া, সেই এড়ো কাষ্ঠ সরাইয়া দিলে ঠিক আপন স্থানে আসিয়া উপস্থিত হইত। তখন উহার মধ্যে দ্রব্যাদি রাখিবার যে একটী স্থান আছে, তাহা আর কাহারও অনুমান করিবার সাধ্য থাকিত না।

 পরিশেষে দেখা গেল যে, ত্রৈলোক্য আপন পুত্ত্রকে বাঁচাইবার নিমিত্ত যাহা যাহা বলিয়াছে, তাহার সমস্তই প্রকৃত। সন্দেশে বাস্তবিকই বিষ পাওয়া গেল, তাহার ঘর অনুসন্ধান করিয়া, কিছু সিদ্ধির সহিত এক খানি কাগজও বাহির হইল। প্রিয়ও পরিশেষে সমস্ত কথা স্বীকার করিয়া, তাহার বিপক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করিল। তখন আমরা হরিকে অব্যাহতি প্রদান করিলাম, এবং বন্দীরূপে ত্রৈলোক্যকে মাজিষ্ট্রেট সাহেবের নিকট পাঠাইলাম। মাজিষ্ট্রেট